মোকারম বিল্লাহ ইমন ও আবুজাফর : সাতক্ষীরার ভোমরায় বিজিবির হাতে ২৫বোতল ভারতীয় কোরেক্স সিরাপ সহ শামীম হোসেন নামে একজনকে আটকের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। সোমবার(৯ জুন)সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। ভোমরা সীমান্তের নবাতকাটি এলাকার বাসিন্দা অমল মন্ডলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন,ভুক্তভোগী শামিমের স্থী তানিয়া খাতুন আঁখি, সেলিনা খাতুন, আফরোজা পারভীন,রাসেল হোসাইন, মিনার হোসেন,আয়শা খাতুন,খাদিজা সুলতানা,আবুল কাশেম,জাকির হোসেন,রকি ইসলাম,আনন্দ সরকার, হোসেন আলী,মহাদেব দাস,নুর জাহান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,রোববার(৮ জুন)সন্ধ্যা ৭টার দিকে ব্যবসায়ী শামিম হোসেন সহ সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা সীমান্তে ডিউটিরত বিজিবি সদস্যরা নবাতকাটি এলাকায় অমলের চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলো।এমন সময় বিজিবির স্পেশাল টিমের সদস্য ইমরান শামিম হোসেনকে একপাশে ডেকে নিয়ে যায় কথা বলার জন্য।পরবর্তীতে মৎস্য ব্যবসায়ী শামীম হোসেন কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে আটক করে বিজিবি ইমরানসহ সঙ্গীয় সদস্যরা।একপর্যায়ে শামিমকে চোখ বেঁধে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নিয়ে যায় ভোমরা সিমান্ত বিজিবি ক্যাম্পে।সেখান থেকে রাতেই ২৫ বোতল ভারতীয় কোরেক্স সিরাপ দিয়ে শামিমকে ৩৩ বিজিবি ক্যাম্পে চালান দেওয়া হয়।
বক্তরা আরও বলেন,,এই ঘটনায় বিজিবির স্পেশাল টিমের সদস্য ইমরান হোসেন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত।সে তার অনৈতিক কর্মকান্ডের দোষ ঢাকতে এলাকার বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী শামিম হোসেনকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।আসল ঘটনা হলো বিজিবি সদস্য ইমরানের সাথে নবাতকাটি এলাকার বাসিন্দা মাদক ব্যবসায়ী কবির হোসেনের মেয়ে শিলার সাথে প্রেমের সম্পর্ক আছে।এটা ব্যবসায়ী শামিম কোন ভাবে দেখে ফেলে।তাকে ফাঁসাতে পরিকল্পিত ভাবেই এই আটকের নাটক সাজানো হয়েছে বলে মনে করেন তারা ।
এলাকাবাসী আরো বলেন, আদতে এই আটকের ঘটনা সম্পুর্ন ও বানোয়াট।তাকে মিথ্যা ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। একই সাথে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীকে শাস্তির আওতায় আনার জন্য সাতক্ষীরা- ৩৩ বিজিবির উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে শিলার মায়ের দাবী তার মেয়ে এবং পরিবারের কেউ ওই বিজিবি সদস্য ইমরানের সাথে পূর্ব পরিচিত নয়। লোকজন তার পরিবারের সম্মান নষ্ট করার জন্য মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে। আমি এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিজিবি সদস্য ইমরান জানান,,শামিম হোসেন একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।গতকাল রোববার রাতে তারা মাদক সহ শামীমকে আটক করেন। ওই সময় গ্রামবাসী চড়াও হয় তাদের পরে। সকালে তারা বিজিবির সুনাম নষ্ট করার জন্য মানববন্ধনের আয়োজন করে।তবে শিলা নামে এক নারী সাথে সম্পর্কের বিষয়ে প্রস্ন ছুড়ে দিলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করেন।
আটক হওয়া শামীম হোসেন জানান, ইতিপূর্বে তার নামে কোন মাদক মামলা নেই। তার বাড়ির পাশের কবির হোসেনের মেয়ে শিলা বাড়িতে অবাদে যাতায়ত করত বিজিবি সদস্য ইমরান। সম্প্রতি এই বিষয়টি কে বা করা বিজিবি সদর দপ্তরে মৌখিক ভাবে জানায় । এতে ইমরান ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে মাদক সহ ফাঁসানো হয়। পরে বিজিবি সদস্যরা ব্যাপক মারপিট করে স্বীকারোক্তি আদায় করে।
বিষয়টি নিয়ে সাতক্ষীরা-৩৩ বিজিবি সদর দপ্তরে যোগাযোগ করলে নাম না জানানোর শর্তে বিজিবির এক কর্মকর্তা জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোমরাস্থল বন্দর এলাকা থেকে
২৫ বোতল ভারতীয় কোরেক্স সিরাপ সহ শামীম নামে একজনকে আটক করা হয়।একই সাথে তার থেকে ভারতীয় রুপি,বাংলাদেশী টাকা,আইফোন-১৫ সহ দুটি ফোন জব্দ করা হয়।যার মূল্য প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। তবে যারা দাবী করছে শামীম নির্দোশ তারা মিথ্যা কথা বলছে।সে একজন চিহ্নিত চোরবারী বিজিবির কাছে তার প্রমান আছে।