১৪ দফা মেনে নেওয়ার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় করনের মাধ্যমে শিক্ষক সমাজের বৈষম্য দূরীকরণ নিশ্চিত করার দাবীতে বাংলাদেশ আর্দশ শিক্ষক ফেডারেশন সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে শিক্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ জুন শনিবার সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করে তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি উপাধ্যক্ষক আব্দুস সবুরের সভাপতিত্ব ও সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ আশফাকুর রহমান বিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রফেসর ডক্টর কোরবান আলী, তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার শিক্ষা ও বিশিষ্ট আলেম ড. খলিলুর রহমান মাদানী। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মুহাঃ রবিউল ইসলাম, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ ডক্টর মাওলানা শাহজান মাদানি,বাংলাদেশ কিন্ডারগার্ডেন শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক পরিষদের সেক্রেটারী মোঃ আব্দুর রহিম সরকার। বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের উপদেষ্টা সাতক্ষীরা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার সভাপতি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, আগরদাড়ি আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, শ্যামনগর আসনের সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাওলানা আজিজুর রহমান। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,উপাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল,গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা মুনতাসিম বিল্লাহ, মোহাম্মদ আলী, কামাল উদ্দীন, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মনোদ্বীপ সরকার,জয়ন্ত কুমার ঘোষ,আজিজুর রহমান,অধ্যাপক ওবায়দুল হক, অধ্যাপক আব্দুল ওয়ারেশসহ অনেকে। সম্মেলনে পাচ সহস্রাধীক শিক্ষক শিক্ষিকা উপস্থিতি ছিলেন।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২৪ এর জুলাই আগস্টের ছাত্র জনতার বিপ্লবের সুফল জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিকট পৌছে দিতে হবে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে শোষণমুক্ত বৈষম্যহীন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়া বর্তমান সময়ের দাবি।
এ অবস্থার প্রেক্ষিতে উপনিবেশিক মানুষিকতা মুক্ত মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন পরমত সহিষ্ণু সহাবস্থানে বিশ্বাসী সৎ দক্ষ, দেশপ্রেমিক সৃজনশীল ও যোগ্য নাগরিক তৈরির জন্য শিক্ষা সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষা ফেডারেশন সাতক্ষীরা জেলা শাখার পক্ষ থেকে সকল শিক্ষকদের ন্যায় সংগত দাবি মেনে নেয়ার জন্য জেলা শিক্ষক সম্মেলন থেকে অর্ন্তবর্তী সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
দাবি সমুহ……
১. শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারির মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরনে সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের চাকুরী জাতীয়করন করতে হবে।
২. জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের ন্যায় এম পি ও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতাসহ ও অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা চাকুরী বিবি অনুযায়ী প্রদান করতে হবে।
৩. বেসরকারি এম পি ও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ঈদুল আজহার পূবেই ১০০% বোনাস দিতে হবে।
৪. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষানলে পড়ে বরখাস্তকৃত সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের বকেয়া পাওনাদিসহ স্বপদে বহাল করতে হবে, যারা অবসরে গেছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণসহ সকল পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে।
৫. প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বেতনভাতা নবম গ্রেড ও সহকারি শিক্ষকদের দশম গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৬. যশোর সরকারি এম এম কলেজকে পুনাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় উন্নিত করতে হবে।
৭. বাংলাদেশের সফল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আন্দোলনে যশোর অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। সেহেতু যশোরকে সাংস্কৃতিক রাজধানী ঘোষণা করা যশোর বাসীর প্রানের দাবির বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮. যশোর বাংলাদেশের একমাত্র ফুল উৎপাদনকারি জেলা দেশের সিংহভাগ সবজি যশোরে উৎপাদন হয়ে থাকে এমতাবস্থায় স্কুল ও সবজি বহুমুখি ব্যাবহার ও উপযোগিতা সৃষ্টির জন্য গবেষনার প্রয়োজন। ফুল ও সবজির উন্নয়ন করনের লক্ষ্যে যশোরে কৃষিপ্রযুক্তি নির্ভর একটি কৃষিপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
৯. জেষ্ঠ্য প্রভাষক নয়, আট বছর পূর্ণ হলেই বেসরকারি কলেজ ও মাদ্রাসার প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নিত করন ও সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করতে হবে। এবং পদ অনুযায়ী বেতনভাতা দিতে হবে।
১০. বেসরকারি এম পি ও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের চাকুরি থেকে অবসর গ্রহনের ছয়মাসের মধ্যে কল্যান ও অবসর তহবিলের টাকা পরিশোধ করতে হবে।
১১. কিন্ডারগার্টেন স্কুলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করে বেতন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. শিক্ষাক্ষেত্রে সকল ধরনের বৈষম্য দূরীকরণ নৈতিক ও মূল্যবোধের আলোকে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়নের জন্য শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
১৩. প্রতি গ্রামে সরকারিভাবে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
১৪। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা করা ও সরকারিভাবে জমি বরাদ্দ দিতে হবে।