সাতক্ষীরায় জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ, ১৬ জুন ২০২৫ সাতক্ষীরার কাটিয়া এলাকায় স্বদেশ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হলো সাতক্ষীরা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভা। ফোরামের সভাপতি প্রফেসর আঃ হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় জেলার জলবায়ু সংকট এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্য সচিব মাধব চন্দ্র দত্ত, শ্যামনগর উপজেলা ফোরামের সম্পাদক রনজিৎ বর্মন, আশাশুনি উপজেলা ফোরামের সভাপতি আব্দুল হান্নানসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার জলবায়ু ফোরামের সদস্যবৃন্দ। সভা পরিচালনায় সহযোগিতা করে লিডার্স, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা।
সভায় জেলা সদস্য সচিব মাধব চন্দ্র দত্ত পূর্ববর্তী সভার রেজুলেশন পাঠ করেন এবং তা সভার সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি, অবকাঠামো ও জনজীবনের উপর বিরূপ প্রভাবের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় উল্লেখ করা হয় যে, জেলার উপকূলীয় কৃষি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। বিশেষ করে আশাশুনি উপজেলায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও তা সংস্কারের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। ৬০% নারী কৃষক কৃষিতে অবদান রাখলেও তারা এখনও অবহেলিত ও স্বীকৃতিহীন। এছাড়া জলাবদ্ধতা, নদী ভাঙন ও নদীশাসন ব্যবস্থার অভাবে অনেক মানুষ পেশা পরিবর্তন করছে বা অন্যত্র মাইগ্রেট করছে।
শ্যামনগর উপজেলা জলবায়ু ফোরামের সম্পাদক রনজিৎ বর্মন বলেন, "যমুনা খালের সমস্যার ফলে শ্যামনগরে জলাবদ্ধতা চরমে পৌঁছেছে। এ সমস্যা নিরসনে স্থানীয় উদ্যোগ ও কেন্দ্রীয় পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলা জরুরি।"
আশাশুনি উপজেলা ফোরামের সভাপতি মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, "জেলেখালীর অনেক মানুষ নদীভাঙনের কারণে বাধ্য হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে গেছে। জলবায়ু সমস্যা এখন আর শুধু প্রকৃতি নয়, মানবাধিকার ও জীবন-জীবিকার বিষয়।"
সভায় ফোরামের সদস্য অধ্যাপক ইদ্রিস বলেন, “আমরা যদি সক্রিয়ভাবে দাবি তুলতে পারি, তাহলে জলাবদ্ধতা কমানো সম্ভব। কারণ জলবায়ু দূর্যোগ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একভাবে আক্রান্ত করে।”
সভার সমাপ্তিতে ফোরামের পক্ষ থেকে কয়েকটি সিদ্ধন্ত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
উপকূলীয় কৃষি বিপর্যয়, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও জলাবদ্ধতা বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলোচনা করা। জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান। গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে টকশো ও মিডিয়া কাভারেজ নিশ্চিত করা।
আলোচনা শেষে সভাপতি প্রফেসর আঃ হামিদ সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।