
প্রধান প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা জেল খানার ডেপুটি জেলার ডলি আক্তার। জলি মেহেজাবিন খান নামে ফেসবুক ব্যবহার করেন এই জেল কর্মকর্তা। পহেলা সেপ্টেম্বর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের একটি অনুষ্ঠানে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ধারাভাষ্যকার দেওয়ার মুহূর্তে একটি নিজের সেলফি তুলে রাখেন ডেপুটি জেলার ডলি আক্তার।
৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮.৪৯ মিনিটে তিনি তার ব্যবহৃত জলি মেহেজাবিন খান নামের ফেসবুকে সেই ছবিটি পোষ্ট করেন। ছবির ক্যাপশানে এই কারা কর্মকর্তা লেখেন, (পাঠকদের জন্য হুবহু) ৫৬ তম ব্যাচ কারারক্ষি বুনিয়াদি প্রশিক্ষন কোর্সের শপথ গ্রহন ও সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সরাষ্ট্রমনত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান এম, পি! এই অনুষ্ঠানের ধারাভাষ্যকার হিসেবে আপনাদের সাথে আছি আমি…………।
ছবিতে কমেন্ট করেন এই নারী কর্মকর্তার অনেক শোভাকাঙ্খী। এর মধ্যে শারমিন ববি নামের একজন নারী মন্তব্য করেছেন, আফা মন্ত্রী বানান টা একটু ঠিক করে দেন, নাহলে কিন্তু মাননীয় মন্ত্রী মাইন্ড খাইতে পারে। এই কমেন্টের প্রতিউত্তরে সাতক্ষীরার জেলখানার ডেপুটি জেলার ডলি আক্তার অরফে জলি মেহেজাবিন খান লিখেছেন, আমি চাটুকারিতা একদম পছন্দ করি না আফা, চাকরি করি জেলখানায়, এরকম বহু নামি দামী ব্যান্ড ভিতরে আসলে বিলাই হয়ে যায়…যাই হোক, স্পেলিং মিসটেক হয়েছে এবং সেটা অনিচ্ছাকৃত। তার উত্তরে শারমিন ববি লিখেছেন, তোকেতো ভালো করেই চিনি, চাটুকারিতা যে করিস না সেটাও জানি, জাস্ট বানান ভুলটা চোখে পড়লো তাই তোকে জানালাম।
সরকারের সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে স্টাটাস দিয়ে সেখানে মন্ত্রীকে বিলাইয়ের সঙ্গে তুলনা কতটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে সে বিষয়ে দৈনিক সাতনদীর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ডেপুটি জেল সুপার ডলি আক্তার অরফে জলি মেহেজাবিন খানের সঙ্গে।
দৈনিক সাতনদীর প্রধান প্রতিবেদককে সাতক্ষীরা কারাগারের এই ডেপুটি জেল সুপার ডলি আক্তার বলেন, ফেসবুক আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে আমি কি লিখবো সেটা অন্য কাউকে তো বলবো না। আর কোন প্রসঙ্গে কার সাথে বলেছি সেটাও আপনার জানতে হবে।
সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিলাই সম্বোধন করে লেখা কতটা সঠিক এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি সরকারি কর্মকর্তা সরকারের মন্ত্রীকে কটাক্ষ আমি করতেই পারি না। তখন তিনি ফেসবুকটি তার নয় বলে অস্বীকার করেন। তখন ফেসবুকে তার ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
ডেপুটি জেলারের এমন ফেসবুক মন্তব্যের বিষয়ে দৈনিক সাতনদীর প্রধান প্রতিবেদককে সাতক্ষীরা কারাগারের জেল সুপার আবু জায়েদ বলেন, সম্প্রতি সাতক্ষীরা কারাগারে যোগদান করেছেন ডলি আক্তার। কাশিমপুর কারাগারের অনুষ্ঠানে আমিও ছিলাম। তবে ফেসবুকে ডলি আক্তার কি লিখেছেন সেটি আমি দেখিনি। তাছাড়া আমাদের কারা আইনে রয়েছে সবকিছু ফেসবুকে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিলাই বলে যদি কোন মন্তব্য করে থাকেন তবে অবশ্যই সেটি সঠিক করেননি। তিনি বর্তমানে ছুটিেেত রয়েছেন। অফিসে যোগদান করলে তাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে।
ঘটনার বিষয়ে দৈনিক সাতনদীর প্রধান প্রতিবেদককে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, ডেপুটি জেলার ডলি আক্তারের ফেসবুকে সরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে এমন মন্তব্যের বিষয়টি আমি এখনো দেখিনি। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এদিকে, দৈনিক সাতনদীর প্রধান প্রতিবেদককে জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে আসেনি এখনো। বিষয়টি না দেখে এখনই কোন মন্তব্য করতে চাই না।