সাতক্ষীরা জেলা তথ্য অফিসের প্রচার মাধ্যমে ২১ মে বৃহষ্পতিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় আমপান এর ক্ষয়ক্ষতির কোন চিত্র পাওয়া গেলো না। এ বিষয়ে জেলা তথ্য অফিসারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, আমরা নির্ভর করি জেলা ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ওপর। তারা এখনও সব তথ্য পায়নি। যোগ করে এও বল্লেন, তার জনবল কম অর্থাৎ মাত্র ৫জনকেই নিয়ে কাজ করেন তিনি।
জেলা তথ্য অফিসের কাজ সরকারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় প্রচার করা। প্রচারের মাধ্যম হলো মাইকিং করা, ফেসবুকপেজ, ওয়েবসাইট, ও দেশের শক্তিমান গণমাধ্যম। কিন্তু সাতক্ষীরা জেলা তথ্য অফিসের কাজ হলো মাঝে মধ্যে মাইকিং করা, সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে সিনেমা দেখানো, সরকারের কিছু দপ্তরের প্রোগ্রাম ফেসবুক পেজে দেওয়া। মাঝেমধ্যে সরকারি টিএন্ডটি টেলিফোন থেকে জেলা প্রশাসকের বিশেষ কোন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সাংবাদিকদের ফোন করা।
এক কথায় জেলা তথ্য অফিসের কাজ হলো সরকারের প্রয়োজনে প্রচার-প্রচারণা করা। এখন প্রশ্ন হলো প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারনা গুলো আসেলে কি? এককথায় বলা যায় সরকারের উন্নয়মূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি দূর্যোগ এর বিভিন্ন মুখী চিত্র তুলে ধরা।
জেলা তথ্য অফিসের ফেসবুক হলো Dio Satkhiraএবং ওয়েবসাইট হলোঃ masscommunicationgroup। এই দুটি মাধ্যমে বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত জেল তথ্য অফিস ঘূর্ণিঝড় আমফান এর কোন চিত্র দেয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে এতবড় দূর্যোগের খবর যদি প্রচার করা তাদের দায়িত্বের মধ্যে না পড়ে তবে তাদের দায়িত্ব কিম্বা কাজটা কি?
জনবল কম বলে জেলা তথ্য অফিস ঠুঁটো জগন্নাথের ভ‚মিকা পালন করবে এটা হতে পারেনা। দৃশ্যমান স্মার্ট ও ডায়নামিক জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল তিনিতো জানেন উপক‚লীয় জেলা সাতক্ষীরার জেলা তথ্য অফিসটিও তার অফিসের মত গতিশলী হতে হবে। তিনি কেন উদ্যোগ নিয়ে কার্যকর করেননা জেলা তথ্য অফিসকে। কারণ তথ্য অফিসটিও তার অধীনে পড়ে।
সরকারের প্রচার-প্রচারণা চালানো যদি তথ্য অফিসের কাজ হয় তবে তারা কেন জেলা শহরের পত্রিকা অফিসগুলোতে তথ্য বিবরণী পাঠাননা?
পত্রিকাগুলো শক্তিশালী গণমাধ্যম। ঘটে যাওয়া মহা এ দূর্যোগকে ঘিরে জেলার সংবাদপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন গত তিন দিন ধরে। করোনাকে ঘিরেও সাংবাদিকরা মাঠে আছে ডাক্তার, নার্স ও পুলিশের মত। সেই সংবাদপত্রের সঙ্গে যোগাযোগের লেশমাত্র নেই জেলা তথ্য অফিসের। বিষয়টা দেখার দায়িত্ব সাতক্ষীরার জন-প্রতিনিধি ও শাসকদলের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের। কিন্তু কোন কিছুতেই তাদের ভ‚মিকা দেখা যায় না। সবাই তোষামোদীতে ব্যস্ত। বলতেই হচ্ছে সরকার চালাচ্ছে আমলারা না এমপি-মন্ত্রীরা?
এ অবস্থার উত্তরণ দরকার। সংবাদ পত্রের মালিকদের কাছে জিম্মি সাংবাদিকরা। তাদের ক্ষুরধার লেখনী এখন আর সংবাদপত্রে জায়গা পায়না। এছাড়াও সত্য খবর প্রকাশ করলে চক্ষু রাঙ্গানী থেকে শুরু করে হামলা, মামলা, খুন ও গুমতো আছেই। ফলে এখন গণমাধ্যমের ভয় পায়না কোন পক্ষই। তাই মহা এই দূর্যোগে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে জেলা তথ্য অফিসটি। করোনা নিয়েও তাদের কাজ চোখে পড়ার মত নয়। দুর্যোগ নিয়ে সংবাদপত্র অফিসে তাদের কোন তথ্য বিবরণী না আসাই প্রমান করে তারা কোন জবাবদিহির মধ্যে নেই।