নিজস্ব প্রতিবেদক: আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ১৯৮০ সালের বাংলাদেশী রোমান্টিক-নাট্য চলচ্চিত্র 'সখী তুমি কার'। ত্রিভুজ প্রেমের এই চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক, শাবানা ও ফারুক। নায়িকা শাবানাকে নিয়ে দুই নায়কের টানাটানি। কে কার? ঠিক তেমনি ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরার কলারোয়ার শিক্ষকনামধারী কথিত সাংবাদিক আনিসের ক্ষেত্রে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৪ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পরিচয়ে দাঁপিয়ে বেড়ানো আনিস ৫ আগস্টের পর বিএনপি হয়ে যান। কলারোয়ায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে নেতৃত্ব দেয়া আনিস এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ফেসবুক লাইভকারী এবং ক্যামেরাম্যান।
এসব সাংবাদিকের কারণে কলারোয়ার প্রকৃত সাংবাদিকরা কোনঠাসা। আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও আনিস জিম্মি করেরে ফেলেছে। লোকজনের মুখে একটাই আলাপ সাতক্ষীরার কলারোয়ার দুর্নীতিপরায়ন ও আতঙ্কগ্রস্ত কলেজ শিক্ষক সাংবাদিক নামধারী কেএম আনিসুর রহমান। সাংবাদিকের আড়ালে অবৈধ আয়ের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন বিরাট সম্পদ বিত্ত বৈভব।
সাংবাদিকের নাম করে হলুদ সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আনিস। মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা, হুমকি ধামকি দেওয়া, নিজেকে বিশাল বড় কিছু মনে করে আত্মহংকারের মুর্তিমান প্রতীক তিনি। কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি, সোনাবাড়িয়া ও চন্দনপুর সীমান্তের কয়েকজন ঘাট মালিকের কাছ থেকে নিয়মিত মাসিক মাসোহারা তার আয়ের অন্যতম উৎস। উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, খাদ্য অফিস, খাদ্য গোডাউন, এলজিইডি, পিআইও অফিস সহ সরকারি বিভিন্ন অফিস থেকে সাংবাদিকতার প্রভাব খাটিয়ে উৎকোচ গ্রহণ করা সাংবাদিকদের মধ্যে অন্যতম প্রধান তিনি। এছাড়াও উপজেলা পার্শ্ববর্তী এলাকার ইটভাটা থেকে টাকা নেয়া ইটভাটায় মাটি প্রদানকারীদের কাছ থেকে বিশেষ সুযোগ সুবিধা নিয়েও তার অন্যতম নিয়মিত কাজের অংশ। ব্যক্তি মানুষের কাছ থেকেও হুমকি ধামকি ও সুযোগ সুবিধা দেয়ার নাম করে টাকা পয়সা নেন তিনি। বিগত আওয়ামী সরকারের সময় নাশকতার মামলায় নাম জড়ানো নাম কর্তন পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া সহ থানা পুলিশের অন্যতম সোর্স ও দালাল হিসেবে প্রকাশ্যে পরিচিত ছিল সাংবাদিক নামধারী আনিস। তিনি পুলিশের সাথে টাকা দেন দরবারে দিতেন এবং তার অর্ধেক টাকা তিনি পেতেন জয়নগর সরসকাটি কলারোয়া পৌরসহ অনেকের কাছে স্পষ্ট ও প্রকাশ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। থানা পুলিশের সাথে বিশেষ সক্ষতা রেখে সাধারণ মানুষকে পুলিশি হয়রানির অন্যতম সহযোগী ছিলেন তিনি। জিরো থেকে হিরো হওয়ার কল্পকাহিনীর বাস্তব উদাহরণ সাংবাদিক আনিসুর রহমান। পৈত্রিক সূত্রে তেমন অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা না থাকলেও বিগত আওয়ামী লীগের আমলে আলাদিনের চেরাগের মতো বিত্ত-বৈভাব সম্পদের মালিক হয়েছন তিনি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। কলারোয়ায় আলিশান বাড়ি, গাড়ি, ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় জমি জায়গা কিনেছেন তিনি বলে শোনা যায়। নানান মেয়েদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ মেলামেশা ছিল অনেকের জানাশোনা। তার বর্তমান স্ত্রীর সাথেও বিশেষ মূহুর্তে সম্পর্ক কাটাতে গিয়ে ধরা খেয়ে বাধ্য হয়ে বয়সে বড় নারীকে বিবাহ করতে বাধ্য হয়েছিল। তার চারিত্রিক ঘটনাও অনেকের মুখে এখনো ছাত্রী ও অন্য নারীদের সাথে তার বিশেষ সংযোগ রয়েছে বলে অনেকে জানান।
বিগত আওয়ামী সময়ের পুরটা সময় জুড়ে তিনি এক সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি ফিরোজ আহমেদ স্বপনের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে ছিলেন এবং তাদের সংবাদ পরিবেশন করতেন। পরবর্তীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লালপুর অত্যন্ত আস্থা ভাষণ ও ঘনিষ্ঠ ভাষণ হিসেবে তার সমস্ত রাজনৈতিক সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিতেন এবং তাদের ব্যক্তিগত সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের সরাসরি ছত্রছায়ায় চিহ্নিত আওয়ামীলীগ নেতা নিয়ে সাংবাদিক সংগঠন খাড়া করেন এমনকি বিএনপি কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের বাড়ির সামনে অবৈধভাবে রাতের আঁধারে সাংবাদিক সংগঠনের অফিস স্থাপন করে সাইনবোর্ড দেন। সে সময় তিনি বিএনপির রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলেও সকলের কাছে শোনেন দেন। অথচ এখন তিনি নিজেকে বিএনপি করেন বলে জোর কদমে এগিয়ে যেতে চাচ্ছেন বিএনপি'র বিভিন্ন নেতাদের সাথে সখ্যতা দেখিয়ে নানান সুযোগ সুবিধা নেয়ার ও চেষ্টা করছেন বলে জানা যায়। প্রতারক, ধুরন্ধরবাজ ও ক্রিটিকাল ব্রেনের অধিকারী হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত আনিস সংবাদিক। তার কালো থাবা থেকে মুক্ত হতে চান নতুন বাংলাদেশের কলারোয়ার মানুষ। সম্প্রতি থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত দমদম এলাকার হাসানকে উঠিয়ে নিয়ে তিন দিন গুম করে রাখার পর ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেন স্থানীয় বিএনপি'র ও যুবদল ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা ওই ঘটনা পত্রিকায় পাবলিস্ট না করার সত্ত্বেও বড় অংকের টাকা লেনদেন করেন সাংবাদিক আনিস। সাংবাদিক আনিসের প্রত্যক্ষ ছত্রছায়ায় কলারোয়ার গদখালী গ্রামের রাব্বি নামের এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন আওয়ামী সাংবাদিকদের গডফাদার ছিলেন তিনি। সীমান্ত এলাকার চিহ্নিত ফেনসিডিল ও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে তার রয়েছে চরম সখ্যতা। সম্প্রতি কেড়াগাছি গ্রামের এক চিহ্নিত মাদক ও চোরাকারবারি কে সাংবাদিক বানিয়ে দেবে বলে বিপুল অংকের লেনদেন হয়েছে এবং তার কাছ থেকে নিয়মিত উৎকোচ গ্রহণ করেন সাংবাদিক আনিস।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ নিয়োগ-বাণিজ্যে প্রকাশ্যে সম্পৃক্ত ছিলেন সাংবাদিক আনিসুর রহমান। আওয়ামীলীগ নেতারা নিয়োগ বাণিজ্যে বিপুল টাকা নিলে পত্রিকায় না দেয়ার স্বার্থে তাকেও টাকা দিতে হতো। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে উপজেলা, পৌরসভা সহ বিভিন্ন দপ্তরে বিজ্ঞপ্তি গুলো তাকে দেয়া বাধ্যতামূলক ছিল আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে। এসব অভিযোগের বিষয়ে আনিসুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করারা হলেও তিনি বলেন, আমি একজন শিক্ষক ও সংবাদকর্মী। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সব মিথ্যা ও বানোয়াট।