
বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের ৩২ বছর বয়সী ফাতেমা বেগম একসময় সুন্দরবনের উপর নির্ভর করেই চলতেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠ, কাঁকড়া ও মাছ সংগ্রহ করে চালাতে হতো সংসার। প্রতিনিয়ত বন্যপ্রাণীর আক্রমণ ও ঘূর্ণিঝড়ের হুমকির মধ্যে জীবন যাপন করা ছিল তার জন্য অভ্যস্ত চিত্র।
২০২৫ সালে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা LEDARS (লোকাল এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চ সোসাইটি) বাস্তবায়িত একটি জলবায়ু সহনশীল বিকল্প জীবিকাভিত্তিক উদ্যোগে অংশগ্রহণের সুযোগ পান ফাতেমা। ৫০ জন নারীর মধ্যে নির্বাচিত হয়ে তিনি সেলাই প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও ব্যবসা পরিকল্পনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণ শেষে LEDARS-এর পক্ষ থেকে ২০,০০০ টাকা স্টার্ট-আপ সহায়তা পেয়ে ফাতেমা নিজ বাড়িতেই শুরু করেন একটি ছোট সেলাই স্টুডিও। বর্তমানে তিনি নিজের ব্যবসা সফলভাবে পরিচালনা করছেন এবং নিয়মিত আয় করছেন, যা দিয়ে তিনি সন্তানদের শিক্ষার খরচ চালাচ্ছেন এবং সংসারেও এনেছেন স্বচ্ছলতা।
ফাতেমা বেগম বলেন, “সেলাই শিখে আমি নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। LEDARS আমাকে সুযোগ দিয়েছে, আর আমি তা কাজে লাগিয়েছি।”
আজ তিনি শুধু একজন সফল নারী উদ্যোক্তাই নন, বরং এলাকা পর্যায়ে অন্য নারীদের জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণার প্রতীক। বননির্ভরতা ছাড়াই নিরাপদ, সম্মানজনক এবং টেকসই জীবনের পথ দেখিয়ে চলেছেন ফাতেমা।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে LEDARS জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় বননির্ভরতাকে কমিয়ে নারীদের টেকসই বিকল্প জীবিকায় সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হচ্ছে—যা বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একটি কার্যকর পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে।