
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাস্তার পাশের গাছ বিক্রির সংবাদ সংগ্রহকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে সাংবাদিকের ভাই আব্দুর রহিম বাবুকে কুপিয়ে জখম করে হামলাকারীরা। সোমবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত আব্দুর রহিম বাবু (৩৯) বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে ব্রহ্মরাজপুর গ্রামের বড়খামার গ্রামের মৃত. আব্দুর রশিদ গাজীর ছেলে। সংবাদ কর্মী রেজাউল করিম মিঠু সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাতনদীর মফস্বল বার্তা সম্পাদক।
হামলার নেতৃত্বদানকারী কাঠ ব্যবসায়ী কোরবান আলী ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও নুনগোলা গ্রামের বাসিন্দা মৃত. আব্দুল মালেক বৈদ্যর ছেলে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা জেয়ালা গ্রামের মোকলেস আলী জানান, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের বাড়ির পূর্ব দিকে সরকারি রাস্তার পাশের বিভিন্ন প্রজাতির ২৪টি গাছ বিক্রি করছেন ইউপি সদস্য কাঠ ব্যবসায়ী কোরবান আলী। গাছগুলো ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ভেঙে পড়েছিল। ভেঙে পড়া গাছ ছাড়াও অতিরিক্ত গাছও কেঁটে বিক্রি করছেন ইউপি সদস্য কোরবান আলী। এমন অভিযোগে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সাতক্ষীরা বন বিভাগের ফরেষ্টার কর্মকর্তা জিএম মারুফ বিল্লাহ সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ফরেষ্টার জিএম মারুফ বিল্লাহ্র উপস্থিতিতে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিক রেজাউল করিম মিঠুর উপর হামলা চালায় ইউপি সদস্য কোরবান আলী ও তার ছেলে বাবু ও ইয়াছিন আরাফাত, সহযোগী ওই এলাকার মহব্বত আলীর ছেলে ইবাদুল, শহিদুল, মকবুল ও মৃত. মনির উদ্দীন কারিগরের ছেলে মহব্বত আলীসহ আরও কয়েকজন। ধর ধর বলে সাংবাদিককে ধাওয়া করে। এ সময় সংবাদকর্মীর ভাই আব্দুর রহিম বাবুকে কুপিয়ে জখম করে ও মারপিট করে পা ভেঙে দেয়। হামলায় আহত হয় আজহারুল ইসলাম ও এশার আলী। পরে সদর থানা পুলিশের একটি দল সাংবাদিকসহ তার ভাইকে উদ্ধার করে।
হামলার বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাঠ ব্যবসায়ী ইউপি সদস্য কোরবান আলী জানান, আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১২টা জামবুল গাছ, মহানিম ১১টা ও একটা মেহগনি মোট ২৪টি গাছ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। গাছগুলো কাঁটার সময় সাংবাদিকরা এসে বাঁধা দেয়। এ সময় মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। আমার ক্রয় করা গাছ কাঁটছি বাঁধা দিলে মারপিট তো হবেই। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে এ গাছগুলোর ডালপালা ভেঙে যায়।
সাতক্ষীরা বন বিভাগের ফরেষ্টার কর্মকর্তা জিএম মারুফ বিল্লাহ জানান, গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনাটি সঠিক। আমি এ বিষয়ে লিখিত রিপোর্ট দেবো। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
ঘটনার বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি জানা মাত্র সদর থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিক রেজাউল করিম মিঠুসহ বাকীদের উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।