
নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্যামনগরে পায়ে ভূয়া ব্যান্ডেজ ও সেনা সদস্য পদ-পদবী ব্যবহার করে থানায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৩ গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন সদর ইউনিয়নের পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ শেফালী পারভীন। শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন গ্রাম পুলিশ ৭ নং ওয়ার্ডের শেফালী, ৩নং ওয়ার্ডের শুকর আলী ও ৪ নং ওয়ার্ডেও রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করায় ইতিমধ্যে সর্বমহলে নিন্দা ও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। থানায় ৮নং মামলাটি দায়ের করেছেন সদর ইউনিয়ন বাদঘাটা গ্রামের মৃত বাবর আলী সরদারের ছেলে আব্দুল হাকিম সরদার।
সরেজমিনে যেয়ে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্রামপুলিশ শেফালী ও আব্দুল হাকিম এর বাড়ি একই সীমানায় অবস্থিত এবং তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি জায়গা সংক্রাšন্তবিষয় নিয়ে বিরোধ চলমান। শেফালির মা লাইলী বেগম জানান, শুক্রবার (৩ জুন) সকালে সদর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত আসনের সদস্য দেলোয়ারা বেগম আব্দুল হাকিমের পক্ষ নিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বহিরাগতদের নিয়ে আমাদের সিমানার কিছু ফলজ গাছ কেটে দেয়। পরবর্তীতে মহিলা মেম্বর দেলয়ারা ফোন করে আমার মেয়েকে ডাকে। শেফালী সেখানে যেয়ে দেখে হাকিমের ঘরে বসে সবাই চা নাস্তা করছে। শেফালী গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলা মেম্বর, তার ভাই রউফ, ছেল মিলন সহ সকলে আমরা মেয়েকে গালিগালাজ কওে ও মারতে আসে এবং বেশি বুঝলে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে চলে যায়। ঐ দিন সন্ধ্যায় আমাদের কাউকে না জানিয়ে তারা আমাদের সীমানার ভিতরে তারকাটার বেড়া দেয়।
স্থানীয়রা জানান, শেফালী ও আব্দুল হাকিমের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। ৪ জুন রাতে শেফালির জমির মধ্যে দিয়ে কে বা কারা এলবেসটার ও কাঁটাতারের বেড়া দেয়। পরদিন সকালে শেফালী এবং তার পরিবারের লোকজন সেই বেড়া সরাতে গেলে আব্দুল হাকিম ও তার নিকটতম আত্মীয় অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন লুৎফর রহমান বাঁধা সৃষ্টি করে। ঘটনার এক পর্যায়ে আব্দুল হাকিম ইউপি সদস্য দেলোয়ারা বেগমকে ফোন করলে দেলোয়ারা বেগম তার ভ্রাতা আব্দুর রউফ,ও তার ছেলে মারুফ হোসেন মিলন তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে এসে শেফালীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা সহ মারতে উদ্যত হয়। এ সময় গ্রামপুলিশ শেফালী তার সহযোগী শুকর আলী ও রুহুল আমিন কে ফোন করলে তারা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয় গ্রুপের মধ্যে তুমুল ঝগড়া ঝাটি হলেও সেখানে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। গ্রামপুলিশ শেফালী বলেন, সত্য ঘটনাকে আড়াল করতে মহিলা মেম্বরের ছেলে মিলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি মিথ্যা পোস্ট দিয়েছে। সেখানে সে লিখেছে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট হজ যাত্রী লুৎফর রহমান জনৈক আব্দুল হাকিমের বাড়িতে বেড়াতে এসে হামলার শিকার হয়েছেন এবং সেই হামলায় লুৎফরের পা ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে সেনা সদস্য লুৎফর রহমান আমার প্রতিবেশী এবং হাকিমের আত্মীয়। তিনি এখানে ১০ কাটা জমি ক্রয় করে বিগত ১০ থেকে ১২ বছর বসবাস করছেন। আব্দুল হাকিম আমাকে মামলায় ফাঁসানোর জন্য তার নিকটতম আত্মীয় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য লুৎফুর রহমান ও তার পদ-পদবী কে ব্যবহার করে তার পায়ের আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে মর্মে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা ও পায়ে ভূয়া ব্যান্ডেজ করেছেন। যাহা শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এম.সি রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। শেফালী আরো বলেন, উক্ত মামলায় আমরা আদালত থেকে জামিন পেয়েছি। আমি শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জহিরুল হায়দার বাবু মহোদয়ের কাছে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে নায্য বিচারের দাবি করছি। এদিকে এক জন মেম্বর বিচারের নামে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নিজের ভাই, ছেলে ও বহিরাগতদেরকে নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করা ও সেনা সদস্যের পায়ে ভূয়া ব্যান্ডেজ করে ৩ জন চৌকিদারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় ইতিমধ্যে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বমহলে নিন্দা, আলোচনা,সমালোচনা ও জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি শ্যামনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভকেট জহুরুল হায়দার বাবু’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।