
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: শ্যামনগরের রমজাননগর ইউনিয়নের তারানীপুর গ্রামে লোনা পানি তুলে ফসলি জমি ও খাবার পানির পুকুরের ক্ষতি করার অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসীরা। এ বিষয়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে জেলা প্রশাসক সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী, শ্যামনগরের এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে একটি অভিযোগ দাখিল করেছে এলাকাবাসীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে যে, রমজাননগর ইউনিয়নের সোরা গ্রামের মৃত্যু তারিফ গাজীর পুত্র শিল্পপতি আলহাজ¦ আরব আলী গাজী দীর্ঘদিন ধরে সোরা গ্রামের কয়েক শ’ একর মৎস্য ঘেরের জমিতে পানি বিক্রি করে আসছে। আর এজন্য ওয়াপদার বেঁড়ীবাঁধ ছিদ্র করে এই লোনা পানি কয়েক শ’ একর মৎস্যঘেরে সরবরাহ করে থাকে। পাশর্^বর্তী ২শ’ একর ধানের ফসলি জমিতে চুইয়ে পানি আসলে চাষীদের ব্যপক ক্ষতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে পানি নিস্কাশন না হওয়ার ফলে এই লোনা পানি ধানের্য ফসলি জমিতে চলে যায়। যার কারনে চাষীরা বর্ষার সময়ে চাষ করতে পারে না এবং ইরি চাষে ব্যাপক লোকশান হয়ে থাকে। এর ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ২টি কেয়ারের রাস্তা। কেয়ারের ইটের সোলিং রাস্তা ১টি লোনা পানিতে ডুবে থাকে। যার কারনে জনসাধারনের চলাচলের অসুবিধা হয়ে থাকে এবং মোটরসাইকেল সহ অন্যাণ্য যানবাহন চলাচলে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে সাধারণ মানুষ। অন্য একটি কেয়ারের কাঁচা রাস্তা সব সময় লোনা পানিতে ডুবে থাকে।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চলের সব থেকে বড় সমস্যা সুপেয় খাবার পানির। যদিও এই এলাকায় বড় ছোট কয়েকটি খাবার পানির পুকুর রয়েছে। কিন্তু বর্ষার সময় লোনা পানিতে ভরে যায় ঐ পুকুরগুলো। পানি নিস্কাশন না হওয়ায় পানি বন্দী অবস্থায় প্রায় ২শ’ পরিবার।
বিষয়টি নিয়ে উক্ত ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হায়াত আলী জানান, শিল্পপতি আলহাজ¦ আরব আলী অর্থের দাপটে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে তার এমন ধরনের অন্যায় কাজ অব্যহত রেখেছে। এক দিকে অর্থ ও অন্য দিকে গরীব, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষ! এলাকায় লোনা পানিতে ভরে ফেলেছেন তিনি। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা অসহায় হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী বার বার শিল্পপতি আলহাজ¦ আরব আলীকে জোয়ার বন্ধের কথা জানালে তিনি কারোর কথা কর্ণ্যপাত না করে তার জোয়ার তোলা অব্যহত রেখেছেন। কোথায় জলবদ্ধতা থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন ধরনের নির্দেশের পরও কিছু অসাধু ব্যক্তিদের কারনে এমন নির্দেশ বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আমরা বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা আশ^াস দিয়েও কোন সূরাহ করেনি।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মাছুদ রানা বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে আলহাজ¦ আরব আলীকে মোবাইলের মাধ্যমে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পানি উঠা কলের জন্য কারোর সমস্য হচ্ছে না। যদি এমন ধরনের অভিযোগ থেকে থাকে তবে আপনি ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে দেখেন। আর আমার পানি উঠা কলের পানি নিস্কাশনের আউট ড্রেনও আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন মিয়া বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করলে তিনি প্রতিবেদনের জন্য আমাকে জানালে আমি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেব। তিনি বিষয়টি দেখবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজার গিফারী বলেন, আমি বিষয়টি দেখছি, জরুরী ভাবে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।