এস কে সিরাজ, শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিএনপির দু’গ্রুপের উত্তেজনাকে ঘিরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা প্রশাসন এ ঘোষনা দেয়। এদিকে দুগ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান কে ঘিরে শ্যামনগর উপজেলা সদরে একটি রক্তক্ষয় সংঘর্ষ হতে পারে এমন আশংকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনি খাতুনের নেতৃত্বে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির মোল্যা সহ সেনা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে বিএনপির দু গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান কে নিবৃত্ত করতে চেষ্টা করে। তার পরে বিক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা ইট পাটকেল ছোড়ে এবং মুহুর মুহুর বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। প্রসাশনের ব্যাপক তৎপরতায় বিক্ষুদ্ধ নেতা কর্মীরা পিছু হাটলেও জেলা বিএনপির সদস্য এ্যাডভোকেট আশেক ই-এলাহী মুন্নার বাড়ীতে বিএনপি নেতা সোলায়মান কবীরের সমর্থকরা হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাবে ভাংচুর করে। পরে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সমস্যরা অবস্থান নিয়ে হামলা ভাংচুর বন্ধের পাশাপাশি হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়। শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মাষ্টার আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ছাত্রদলের বুধবার বিকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলাম। কর্মসৃচী চলাকালীন প্রসাশন ১৪৪ ধারা জারী করে আমাদের প্রোগ্রাম শেষ করতে বলে, পরে শান্তিপূর্ণভাবে আমরা চলে আসি। এদিকে বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির আহবায়ক ও সাবেক বিএনপির সাধারন সম্পাদক জি এম সোলায়মান কবীর বলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব সম্মিলিত ভাবে শ্যামনগর বিএনপির আহবায়ক ও পৌর বিএনপির কমিটি দিয়েছে, পরে শুধুমাত্র সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম একক ভাবে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করেছেন। চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের এধরনের সিদ্ধান্ত আমরা মানিনা, তাকে আমরা অবাঞ্চিত ঘোষনা করলাম। জানা গেছে, বিএনপির উপজেলা ও পৌর কমিটি ঘিরে টানা কয়েকদিন ধরেই শ্যামনগরে ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পরামর্শে জেলা আহবায়ক কমিটি,শ্যামনগরের নবঘোষিত উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির কমিটি সহ সকল কমিটি জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে লিখিত ভাবে বিলুপ্ত ঘোষনা করেন। উপজেলার বাস টার্মিনালে শান্তি সমাবেশ ডাকে বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান কবিরের গ্রুপ। তবে এ কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের গ্রুপ একই এলাকায় ছাত্রদলের আয়োজনে লিফলেট বিতরন কর্মসূচি পালন করছিল। এ সময় দুই গ্রুপের এমন মুখোমুখি অবস্থানে বিশৃঙ্খলা এড়াতে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। শ্যামনগর থানা পুলিশ জানান, রাজনৈতিক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়ায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে জেলা বিএনপির সদস্য আশেক ই এলাহী মুন্না বলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক জি এম সোলায়মান কবীর, যুবদলের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম দুলু, নুরনগর বিএনপির সভাপতি গোলাম আলমগীর, বিএনপি নেতা আব্দুল ওহাবের নেতৃত্বে আমার বাড়ীতে ঢুকে ব্যাপক ভাবে ভাংচুর করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্য্যায় আমার ছোট শিশুটাকে ও তারা ছাড় দেই নাই,সে গুরুতর আহত হয়েছে। এদিকে সর্বক্ষন মাঠে অবস্থান নিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনি খাতুন বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে, কেউ শান্তি নষ্ট চাইলে প্রশাসন কঠিন ভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
শ্যামনগরে বিএনপির দু-গ্রুপের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতার বাড়ী ভাংচুর: ১৪৪ ধারা জারী
পূর্ববর্তী পোস্ট