সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর ব্যুরো: শ্যামনগর উপজেলার পাউবোর ভেড়ীবাঁধ মারাত্মক হুমকীর মুখে। যে কোন সময় সামান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগে তিন লক্ষাধিক মানুষ বিপদের সম্মুখিন হওয়ার আশংকায়। শ্যামনগর উপজেলার নদী ঘেষা আটি ইউনিয়নের একাধিক পয়েন্টে অপরিকল্পিত চিংড়ি ঘেরে পানি সরবরাহের গেট সিডর ও আইলায়সহ নদী ভাঙ্গনের কারনে প্রায় অর্ধ শতাধিক স্থানে পানি উন্নয়নবোর্ডের ভেড়ী বাঁধের একাংশ ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হয়েছে। এছাড়া ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর সিডর ও ২০০৯ সালের ২৫শে মে আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার ৯৫% আজ পর্যন্ত পুনঃ নির্মান বা সংষ্কার কার হয়নি। সে কারনে শ্যামনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন যথাক্রমে, কাঁশিমাড়ী, আটুলিয়া, পদ্ম পুকুর, গাবুরা, বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সীগঞ্জ, রমজাননগর ও কৈখালী ইউনিয়নের প্রায় দুই-শ কি.মি রাস্তা স্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবিত হওয়ার আশাংকা রয়েছে। তাছাড়া সামান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগ হলে চলতি মৌসুমে প্রায় অর্ধশত স্থানে নদী ভাঙ্গন ও প্লাবিত হয়ে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ, গবাদী পশু ও বসত বাড়ী বিপদের সম্মুখিন হতে পারে। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাঁশিমাড়ী ইউনিয়নের ঘোলা, ঝাঁপালি, খুটিকাটা, আটুলিয়া ইউনিয়নের বেড়ালক্ষী, বড়কুপট ও দূর্গাবাটি দ্বীপ ইউনিয়ন নামে পরিচিত পদ্ম পুকুর ও গাবুরার প্রায় সব এলাকা বুড়িগোয়ালিনীর দাতিনা খালী ও বুড়িগোয়ালীনি, মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব কালীনগর, দক্ষিন কদমতলা ও সিংহড়তলী, রমজান নগর ইউনিয়ের টেংরাখালী, গোলাখালী, কালিঞ্চি ও কৈখালী ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশাংখায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ জীবন-যাপন করছে। এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে পাউবোর কমপক্ষে ৫০টি স্লইজ গেইট জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া শত শত স্থানে অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের মিনি স্লুইস গেইট নির্মাণ করায় সেগুলোও ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় আছে। সুধিমহল জানিয়েছে আইলায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রধান কারন ছিল চিংড়ী ঘেরের অপরিকল্পিত স্লুইজ গেইট। এ ব্যপারে পাউবোর সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের ও সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার মাধ্যমে জানা যায়, ঝুঁকি পূর্ণ ভেড়ীবাঁধসহ যাবতীয় ক্ষতি গ্রস্ত ভেড়ী বাঁধের পূন: নির্মান ও সংষ্কারের বরাদ্ধ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে চলতি মৌসুমে ঝুঁকি পূর্ন এলাকাগুলির রাস্তার পূন: নির্মাণ বা সংষ্কার করা হবে। এ ব্যাপারে কথা হয় সাতক্ষীরা সংসদীয় ০৪ আসনের এমপি এসএম জগলুল হায়দারের সাথে। তিনি জানান, সিডর আইলার পর শ্যামনগর উপকূলে প্রায় ১০টি ইউনিয়নের পাউবোর ভেড়ী বাঁধ খুবই ঝুঁকি পূর্ণ, বিষয়টি মন্ত্রনালয় ও একাধিকবার মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছি। উপকূলীয় এলাকায় একটি টেকসই, মজবুত ভেঁড়ী-বাঁধ নির্মানের পরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে। অতি দ্রুতই যার সুফল আপনারা দেখতে পাবেন।