প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ২৪, ২০২৫, ৫:০৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯, ৬:৫০ অপরাহ্ণ
শ্যামনগরে নির্যাতিত আ’লীগ নেতা-কর্মীদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল
মোঃ আমজাদ হোসেন মিঠু শ্যামনগরঃ শ্যামনগরে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়। এরই প্রতিবাদে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৫ টায় শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডঃ জহুরুল হায়দার বাবুর আয়োজনে ও সভাপতিত্বে এবং সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব জি এম আকবর কবিরের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারম্যান এ্যাডঃ আতাউর রহমান, ভবতোষ কুমার মন্ডল, আব্দুর রউফ, কাশিমাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শমসের ঢালী সহ উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এসময় এ্যাডঃ জহুরুল হায়দার বাবু তার বক্তব্যে বলেন, আজ সেই কাল রাত, সেই দুঃসহ রাতের স্মৃতি। গত ২৬ শে ডিসেম্বর সকাল বেলা।অন্যান্য আর পাঁচটা দিনের মত ঘুম ভাঙলো সুবেহ সাদেক এর সময় ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনিতে।বরাবরের মত বাসায় নেতাকর্মীদের সাক্ষাত ও নির্বাচনের দিনের কর্মতৎপরতার খোঁজ নিচ্ছিলাম।তারপর সারাদিন বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে দুপুরে কোনমতে দু মুঠো খেয়ে বিকালের কর্মসূচীতে অংশ শেষে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম সান্ধ্য কর্মসূচীর।হঠাৎ খবর পেলাম কুলা প্রতীকের প্রার্থীর নেতৃত্বে কয়েকশত কর্মী একযোগে পরানপুরে কৈখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কার্যালয় হামলা ও ভাঙচুর শেষে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে নূরনগরেও নৌকার অফিস এবং নৌকার মিছিলে হামলা করেছে।ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কুলার প্রার্থীর সহিংস কর্মের প্রতিরোধে আহবান করলাম নৌকার কর্মীদের।আমার আহবানে মাঠে নেমে আসলো হাজারো নেতকর্মী।প্রতিবাদে উত্তাল বিক্ষুব্ধ আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের ভয়ে পিছুটান দেয় কুলার সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী।২৭ শে ডিসেম্বর বিকালে পদ্মপুকুর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি এস এম আতাউর রহমান এর বাড়ীতে কুলার ক্যাডারদের হামলার খবর শোনা মাত্রই ধৈর্য্য আর ধরতে পারিনি।বিক্ষুব্ধ চিত্তে তাৎক্ষণিক প্রতিরোধের আহবান জানিয়ে হাজারো নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে শ্যামনগর সদরে শক্ত অবস্থান নেই,প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে শ্যামনগর।অবস্থা বেগতিক দেখে কুলার প্রার্থী পুলিশের নিরাপত্তা দাবী করলেও আমার কঠোর মনোভাবের কারণে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে তারা।কিন্তু আমি সহিংস সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই বলে তাদের শেষ সুযোগ দেই শোধরানোর।
কিন্তু কালো টাকার প্রভাবে আওয়ামীলীগের স্বার্থান্বেষী ক্ষমতালিপ্সু বেঈমানদের সাথে গোপন আঁতাতের ষড়যন্ত্রের জাল পাতে কুলার প্রার্থী।২৮ শে ডিসেম্বর এর দিন ছিল জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন।
প্রিয়তম স্ত্রী ও দুই কন্যার অশ্রুসজল দৃষ্টি নির্বাক বলছিলো অনেক কথাই।ওরা ওদের প্রিয় মেজ কাকুর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও যেকোনভাবেই বিজয়ের প্রত্যাশা করছিলো বাবার কাছে।
চারিদিকে খবর আসছিলো বেঈমান মুনাফিকদের নানা তৎপরতার।কিন্তু সাহস হারাইনি,হতোদ্যম হইনি।বরং কঠিন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারলাম।প্রয়োজনে মরবো,তবু বঙ্গবন্ধুর মার্কা-শেখ হাসিনার মার্কা নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করবোই।
সন্ধ্যায় নাটকীয় শুধু নয়,বেঈমানী মিরজাফরদের হার মানিয়েও কতিপয় স্বার্থান্বেষী আওয়ামীলীগ নেতা কিভাবে ডিগবাজি দিলো তা প্রত্যক্ষ করে হতবাক হলাম।চারিদিকে খবর আসতে থাকলো এই বেঈমানের দোসরদের নারকীয় তাণ্ডবের।
আমাকে প্রধান টার্গেট করে নৌকার পক্ষে থাকা নেতা কর্মীদেরকে হত্যার ষড়যন্ত্রের খবর আসলো।কিন্তু উত্তেজিত না হয়ে,কৌশলী ভূমিকা নিলাম।তাৎক্ষণিক চিন্তা করলাম ওদের সহ সকল নেতাকর্মীর জীবনের প্রতি ঝুঁকি কমাতে হবেই।আমার একটাই টার্গেট ছিল প্রয়োজনে মরবো, তবুও প্রিয় অভিভাবক জগলুল হায়দারকে বিজয়ী করবোই। সকলকে বললাম দাপ্তরিক কাজ প্রস্তুত রেখে সকলের সাথে সমন্বয় করতে।আমি মোবাইলে যোগাযোগ করে সকলকে সাহস দিলাম,ধৈর্য্য ধারণের পরামর্শ দিলাম।এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে।তাৎক্ষণিক মেজভাই ও আমি যোগাযোগ করলাম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর নীতিনির্ধারকদের সাথে।উনারা আশ্বস্ত করলেন এবং নির্দেশনা দিলেন নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে।গভীর রাতে ফিরে শ্যামনগর এসে,সকল নেতাকর্মীদের মোবাইলে নির্দেশনা দিলাম শক্ত অবস্থান গড়ে তোলার।মেজ ভাই এর দিকনির্দেশনায় আমার নেতৃত্বে নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ নেতাকর্মী কিছু সংখ্যক বেঈমানের ডিগবাজি স্বত্তেও দৃঢ় আস্থায় অবিচল ছিল বলেই আজকের বিজয়।এই বিজয় অনেক কিছু শিখিয়েছে,দেখিয়েছে।দেখেছি মুখোশের আড়ালে বেঈমানের আসল রুপ,দেখেছি প্রিয়জনের আকুতি ও ত্যাগের মানসিকতা।শিখেছি কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় বেঈমানী,কিভাবে কালো টাকা ও পেশীশক্তি মোকাবেলা করে জনগণের ভালবাসা ও আস্থায় বিজয়ী হতে হয় এসব কথা বলেন তিনি।
Copyright © 2025 দৈনিক সাতনদী. All rights reserved.