
আব্দুল হাকিম, বিশেষ প্রতিবেদক শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কৈখালি ইউনিয়নের পশ্চিম কৈখালি গ্রামের কফিল উদ্দীন শেখের ছেলে রতন ও একই গ্রামের মনো মিস্ত্রীর ছেলে মিজানুর রহমান বাঘের কবলে নিহতের ঘটনা ফেসবুক ও অনলাইন নিউজে তোড়পাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার সকালে মাদক সম্রাট মামুনকে স্থানীয়রা ও নিখোঁজ পরিবারের লোকেরা আটক করলে রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে।
নিখোঁজ রতনের পিতা কফিল উদ্দীন জানান,প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ভারত থেকে মাদক দ্রব্য, গরু ও অবৈধ মালামাল নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে আসছিল সাপখালি গ্রামের জহারালী কয়ালের ছেলে মাদক সম্রাট মামুন কয়াল। গত ২১ জানুয়ারী বিশিষ্ট মাদক সাম্রাট মামুন কয়াল চোরাচালানীর সদস্য রতন শেখ, মিজানুর রহমান ও আবু মুসাকে চোরাই পথে ভারত থেকে গরু আনতে জোন হিসেবে পাঠান। সেই থেকে নিখোঁজ রয়েছে রতন ও মিজানুর আর ভারতে পালিয়ে আছে আবু মুসা। আটক মাদক সম্রাট মামুন কয়াল জানান, গরু নিয়ে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে আসার পথে বিএসএফ এর গোলা গুলিতে নিহত হয়েছে বলে সহযোগি আবু মুসা ফোনে মামুনকে জানায়।
রতনের স্ত্রী তাছলিমা জানান,মামুন,আয়জুল ও আশরাফ তিন জন আমার স্বামীকে ভারতে গরু আনতে জোন হিসেবে নিয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, তার স্বামী সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যায়নি। সে তার স্বামীর লাশ পেতে চায়।
রতনের শশুর ফজলুল হক জানান, জামাই রতনকে ভারতে গরু আনতে পাঠায় গরু নিয়ে আসার পথে বি এসএফ এর গুলিতে মারা গেছে বলে সহযোগি মুসা মামুনকে জানানিয়ে বলে মামুন আমাকে জানায়। নিখোঁজ দুই পরিবারের লোকেরা নিখোঁজ দুই জনের লাশ পেতে চায়।
সরেজমিনে এলাকায় বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান,নিখোঁজ রতন ও মিজানুর চোরাচালানী কাজে সদস্য হিসেবে বহুদিন যাবৎ নিয়োজিত। সুন্দরবনে মাছ ও কাকঁড়া ধরতে যায় না। মাছ ও কাকঁড়া ধরতে হলে বন অফিস থেকে অনুমতি পত্র (পাস) নিয়ে যেতে হয়। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, নিখোঁজ এই দুই ব্যক্তি আদৌ বন অফিস হতে অনুমতি (পাস) গ্রহন করেনি।
কৈখালি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান,নিখোঁজ রতন ও মিজানুর বন অফিস থেকে পাস নিয়ে সুন্দরবনে ভারত সীমানায় মাছ ধরতে যেয়ে বাঘের কবলে নিহত হয়েছে বলে তিনি জানান।
কৈখালি বন অফিসের ষ্টোশন কর্মকর্তা মোবারক হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নিখোঁজ রতন ও মিজানুর কৈখালি বন অফিস থেকে অনুমতি পত্র (পাস) গ্রহন করেনি।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) এমএ হাসান বলেন, নিখোঁজ দুইজন বন অফিস হতে পাস নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে আদৌ যায়নি বলে তিনি জানান। শ্যামনগর থানার ওসি আলহাজ্ব নাজমুল হুদা বলেন, স্থানীয়রা চোরাকারবারী মামুনকে আটক করেছে তাকে নিয়ে সুন্দবেনের ভিতরে ঘটনা স্থলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আটক রেখেছে।
এদিকে নিখোঁজ রতন ও মিজানুরের সহযোগি আবু মুসা ভারত থেকে ফিরে আসলে আসল রহস্য উদঘাটন হবে বলে স্থানীয়রা জানান।