স্টাফ রিপোর্টার: খুলনার একটি পুরোনো ভিডিও ব্যবহার করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি দালালচক্র। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো এই ভুয়া ভিডিওকে ঘিরে চিকিৎসকদের মানহানি ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি শ্যামনগরকেন্দ্রিক কয়েকটি ফেসবুক পেজ থেকে “নারী ও মাদকসহ চিকিৎসক আটক” শিরোনামে একটি ভিডিও ছড়ানো হয়। এতে দাবি করা হয়, শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসককে নারী ও মাদকের সঙ্গে আটক করা হয়েছে। ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
তবে সরেজমিনে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এমন কোনো ঘটনা সেখানে কখনো ঘটেনি। হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন বলেও তারা দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জিয়াউর রহমান বলেন, আমার নজরে এসেছে যে কিছু ফেসবুক পেজ থেকে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাদের হাসপাতালে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এই হাসপাতাল বহুদিন ধরে সুন্দরবনসংলগ্ন দুর্গম এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নিবেদিতভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, স্বার্থান্বেষী একটি মহল হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এবং চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে এই অপপ্রচারে লিপ্ত। আমরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
প্রকাশিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেটি ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতাল—খুলনা হেলথ গার্ডেনের। সেদিন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানের ভিডিওটি ধারণ করা হয়। তবে সেই ঘটনায়ও কোনো চিকিৎসকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ঐ ঘটনার মামলা এখনো খুলনায় বিচারাধীন রয়েছে এবং অভিযুক্তদের তালিকায় কোনো চিকিৎসকের নাম নেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাসপাতাল ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে চলা অসাধু সার্টিফিকেট বাণিজ্য ও দালালচক্র এই ভুয়া ভিডিওকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা করছে। স্থানীয় সচেতন মহল এই অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।