সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর প্রতিনিধিঃ শ্যামনগরে গ্রেফতার আতংকে পলাতক সদ্য বহিষ্কৃত জামাত ক্যাডার গুমানতলী ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আব্দুল মহিদ। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় রবিবার ১৩ অক্টোবর সকাল ১০.টায় আন্তর্জানিত দূর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৯ উপলক্ষ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক দূর্যোগ সহনশীল ঘর ও বহুতল ভবন সাইক্লোন শেল্টার উদ্বোধনের অংশ হিসেবে শ্যামনগর ডিজিটাল পদ্ধতিতে গুমানতলী ফাজিল মাদ্রাসা বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধনের স্থানীয় অনুষ্ঠানে বিতর্কিত জামাত ক্যাডার প্রিন্সিপাল শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তার স্থলে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন। যার করনে মাদ্রাসার সভাপতি প্রাক্তন সংসদ সদস্য একে ফজলুল হক জনতার তোপের মুখে তাৎক্ষনিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করে। তার পর থেকে বিতর্কিত প্রিন্সিপাল গ্রেফতার ও জনরোষ ঠেকাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তথ্য সংগ্রহকালে আরও জানা যায়, বিতর্কিত প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল মহিদ ২০০১ সালে জামায়াত বিএনপি সরকার গঠন করলে তৎকালীন এমপি গাজী নজরুলের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। যা এলাকায় সকলের কাছে পরিষ্কার। তাছাড়া গাজী নজরুল এমপির প্রভাবে প্রিন্সিপাল আব্দুল মহিদ গোটা শ্যামনগর এলাকা সন্ত্রাসীর আধিপত্য বিস্তার করেছে। প্রতিটি হাইস্কুল ও মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে গাজী নজরুলের পক্ষ হতে প্রিন্সিপাল আ. মহিদের সাথে সাক্ষাৎ ছাড়া নিয়োগ দিতে বা কেউ চাকরি নিতে পারেনি এ অভিযোগ ভূক্তভোগী মহলের। এছাড়া জামায়াত, বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হলেও দলের দূর্সময়ে ভিতরে ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে মহিদ। তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে মাওলানা সাইদীর যুদ্ধাপরাধী মামলার রায়ের আগে ও পরে নাশকতাসহ নানান সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। তার কর্মস্থল গুমানতলী ফাজিল মাদ্রাসার চেয়ারে বসে সরকার বিরোধী নানান কৌশল আঁকছেন মাওলানা মহিদ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৫ জানুয়ারী জাতীয় নির্বাচনের আগে জয়নগর মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। তৎকালিন সময়ে তার নেতৃত্বে শত শত লোক সরকার বিরোধী শ্লোগান দিয়ে দা,লাঠি, শাবল রড নিয়ে সরকারি রাস্তা, গাছ কাটা ও মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। গত ১৭ সালে তিনি গুমানতলী মাদ্রাসায় পিন্সিপাল হিসেবে যোগদান করে প্রকাশ্য জামাতের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, গুমানতলী ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওঃ আব্দুল মহিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ১৩ অক্টোবর রবিবার আন্তর্জাতিক দূর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশ নেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সারা দেশের ন্যয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে গুমানতলী ফাজিল মাদ্রাসার বহুমুখী আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধনকালে স্থানীয় উদ্বোধনী সভায় বক্তব্যকালে প্রিন্সিপাল আঃ মহিদ বলেন, ‘বর্তমান প্রধান মন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং খালেদা জিয়ার মহতী উদ্যোগের কারনে আমরা একটি বহুতল ভবন পেয়েছি’। একথা বলার সাথে সাথে উপস্থিত জনতা প্রিন্সিপাল আঃ মহিদের উপর ক্ষেপে পড়লে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য একে ফজলুল হক বিতর্কিত প্রিন্সপালকে সভাস্থল থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে তার বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সভাপতি ঘোষণা দেন। এ সময় উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার বিতর্কিত প্রিন্সিপাল আঃ মহিদকে সভাস্থল ত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত উৎসুক জনতা বিষয়টি স্বাগত জানান। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা-৪ আসনের মাননীয় সংসগ সদস্য এসএম জগলুল হায়দারের সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, পিন্সিপাল আ. মহিদের বিষয়টি ক্ষমাযোগ্য নয়। তার বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতসহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাওলানা মহিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।