নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের আর্থিক যোগান দাতা ,অর্থ সংগ্রহকারী, বদলি বাণিজ্য পরিচালনা করেন সহকারী শিক্ষক নুরুন্নবী। সরকার বদলি বাণিজ্য বন্ধ করতে অনলাইন শিক্ষক বদলি নীতিমালা ও সিস্টেম চালু করেছেন। সরকারের এ মহৎ উদ্দেশ্যকে ভুলুণ্ঠিত করেছে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মদদপুষ্ট সহকারী শিক্ষক নুরুন্নবী। বদলি বাণিজ্য জিরোতে নামাতে এবছর অনলাইন বদলি নীতিমালা ও সিস্টেমের দ্বার উন্মোচিত হয় । শ্যামনগর উপজেলার বদলীতে সীমাহীন অনিয়ম এবং বদলী বাণিজ্যের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার তার ঘুষ বাণিজ্যে করার সহযোগী হিসেবে উপজেলার ৪৮ নম্বর ঝাপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুন্নবীকে কাজে লাগিয়েছেন। শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে অফিসের নানা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছেন তিনি। শিক্ষা অফিসারের ঘুষের টাকা চুক্তি ও আদায় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।এবছর প্রথম ধাপের অনলাইন বদলীতে শিক্ষক নুরুন্নবীকে নিয়ে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছেন বলে জানা গেছে। প্রথম ধাপের বদলীতে জুনিয়র শিক্ষকদের বদলী আধিকের কারণ উৎঘাটন করতে গিয়ে এ তথ্য বেরিয়ে এসছে।
সাধারণ শিক্ষকগণ তাদেও প্রয়োজনীয় কাজ নিয়ে শিক্ষা অফিসে গেলে শিক্ষক নুরুন্নবী এগিয়ে আসেন। তিনি শিক্ষা অফিসের কর্মচারী নাকি কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক তা সহজে অনুমান করা কঠিন। প্রতিদিন শিক্ষা অফিসে ৯টা -৪টা পর্যন্ত শিক্ষা অফিসের অফিস করেন তিনি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে নুরুন্নবী উপজেলার ৪৮ নম্বর ঝাপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হলেও তিনি নিজ স্কুলে যান না। তার স্ত্রী পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলা রতনপুর ইউনিয়ের মুড়াগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শ্যামনগরের গোডাউন মোড় এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষক নুরুন্নবী নিয়মিত স্ত্রীকে বিদ্যালয়ে পৌছে দিয়ে শিক্ষা অফিসে গমন করেন। শিক্ষা অফিসে এসে শিক্ষা অফিসারের সাথে বৈঠক করে দিনের কর্মসূচী বের করেন। এরপর শিক্ষক নুরুন্নবী শুরু করেন সারাদিনের রুটিন ওয়ার্ক। বদলি হতে না পারা একাধিক শিক্ষক এর পক্ষ থেকে জানা গেছে তাদের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ করেছেন। টাকা ধার করে বাড়ী তৈরীর কাজ করা নুরুন্নবী এখন দ্বিতল ভবনের এর কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন।
নুরুন্নবী সম্পর্কে জানতে তার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ষষ্ঠী রানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন “আমার বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় বর্তমানে আমরা ৪জন কর্মরত। শিক্ষক নুরুন্নবীর অনুপস্থিতিতে আমরা তিন জন দির্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছি। আমি শিক্ষক হাজিরা রিটার্র্ণ ফাঁকা রাখি এবং সে অবস্থাতেই অফিস জমা দেই, সম্ভাবতঃ শিক্ষা অফিস থেকে সে রিটার্ণে স্বাক্ষর করে।” শিক্ষক নুরুন্নবী কতদিন বিদ্যালয়ে আসেন না? এই প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) এড়িয়ে যান। তিনি ঠিকমতো বিদ্যালয়ে না আসায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি। কিন্ত অদ্যবধি কোন সুরাহা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিজ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। একজন সহকারী শিক্ষকের কাজ হলো নিয়মিত পাঠদান করা । শিক্ষক নুরুন্নবী দির্ঘদিন বিদ্যালয়ে না গিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে সময় কাটান। এমন শিক্ষা প্রশাসন কারো কাম্য নয়। শিক্ষক নুরুন্নবীর স্থায়ী ঠিকানা পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতা খালি গ্রাম। বিগত কয়েক বছর ধরে শিক্ষা অফিসের সাথে যুক্ত থেকে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে বাড়ীসহ জমি ক্রয় করা তার অনৈতিক অর্থ-বানিজ্যের ফসল বলে জানিয়েছেন শিক্ষকদের অনেকে। তিনি স্ব-পরিবারে শ্যামনগরে বসবাস করছেন। নিজের বিদ্যালয়ের দুরত্ব ১৫ কি.মি আর তার স্ত্রী ভিন্ন উপজেলার শিক্ষক হলেও অজ্ঞাত কারণে একই উপজেলায় বদলী করেননি। তিনি ২০ কিলোমিটার দূরে তার স্ত্রীকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার উপজেলায় আসেন শিক্ষার উন্নয়ন ঘটাতে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞা শ্যামনগরে এসেছেন ৪৮ নং ঝাপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুন্নবীকে সাথে রেখে ঐ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের জন্য কি দিচ্ছেন? নাকি শুধু মাত্র নিজের অর্থ বাণিজ্য সচল রাখতে নিয়ে শিক্ষা অফিসার এমনটি করে যাচ্ছেন বিষয়টি জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বদলী বাণিজ্যে নুরুন্নবীর খপ্পড়ে পড়ে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা উপজেলা শিক্ষা অফিসার এর থেকে ছত্রছায়ায় থেকে ঘুষ আদায় কারী নুরুন্নবীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ।