
জাতীয় ডেস্ক:
দিনাজপুরের বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশনের এক লাইনে দাঁড়িয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি রেলকোচ। সেই কোচের দেয়াল জুড়ে রং তুলির আঁচড়ে ফুটে রয়েছে ভাষা আন্দোলন, ছয় দফাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথার ইতিহাস জানাতে এই রেল কোচটিই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর।’
রেল জাদুঘরটি বিরামপুর রেলস্টেশনে আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকার সব বয়সের মানুষ দেখার জন্য ছুটে আসে। জাদুঘরটি দেখতে ভিড় করছে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন বয়সী, শ্রেণি-পেশার মানুষ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুরের বিরামপুরে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি অবস্থান করে এবং ২ মার্চ এটি ছেড়ে যাবে। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটির উদ্বোধন করা হয়।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিপাটি করে সাজানো রেলবগিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত মুজিব শতবর্ষের লোগো, বঙ্গবন্ধুর জীবন-আন্দোলনের সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভিডিওর মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা, দলীয় প্রতীক নৌকা, মুজিব শতবর্ষের লোগো, মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণের ছবি, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধুর টুঙ্গিপাড়ার বাবার বাড়ি, জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ছবি স্থান পেয়েছে ইত্যাদি। ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানের আদলে তৈরি করা হয়েছে সৃজনশীল একটি বুক সেলফ। সেখানে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়াচীনসহ তার কর্মময় জীবনের ওপরে রচিত গুরুত্বপূর্ণ বই ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা বই শেখ মুজিব আমার পিতা। এই জাদুঘরে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ১২টি গ্যালারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
মোস্তাকিম হোসেন নামের এক ট্রেন যাত্রী বলেন, স্টেশনে এসে দেখি ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর। পুরোটা ঘুরে দেখলাম। খুবই ভালো উদ্যোগ। এখান থেকে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, ছয় দফাসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সম্পর্কেও জানতে পারবে।
রেল যাদুঘরটি দেখতে আসা বিরামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাউল ইসলাম ও স্কুল শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ইচ্ছা থাকলেও আমাদের নানা ব্যস্ততার কারণে জাদুঘরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানা হয়ে ওঠে না। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ এ জাদুঘর মানুষের কাছে চলে আসায় এসব ইতিহাস সহজে জানতে পারছে সবাই।
এ বিষয়ে বিরামপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনন্দ চক্রবর্তী জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর কোচটি বিরামপুরে এসে পৌঁছায়। এর আগে গত ২৭ এপ্রিল ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটির উদ্বোধন করা হয়। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিনশ্র শ্রদ্ধা জানাতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর আংশিক জীবনী তুলে ধরতে রেলপথ মন্ত্রণালয় এই জাদুঘরটি নির্মাণ করেছেন।