সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: আশাশুনিতে উপকুলীয় এলাকায় পৌষের শেষ শীতেই মানুষের জীবন যাত্রা কাহিল হয়ে পড়েছে। পৌষের শীতে কাবু দেশ। উপকুলীয় উপজেলা হিসেবে আশাশুনিতে শীতের তীব্রতাও বেড়েছে বেশ ভালোভাবেই। কার্ত্তিক অগ্রহায়নের শুরুতে তেমন শীত অনুভূত না হলেও গত কয়েক দিনের মৃদু শৈত্য প্রবাহে শীত বাড়ছে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন ছিন্নমূল লোকজন।তীব্র শীতে ভাঙ্গন এলাকা, ফুটপাত ও বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।শীতের কারণে আশাশুনির বিভিন্ন হাট বাজারে পুরানো শীতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক পড়েছে। এদিকে সকালে তীব্র ঠান্ডায় কাজে বের হতে পারছে না মানুষ। এছাড়াও বিকেল থেকেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় সন্ধ্যার পরপরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার ও দোকানপাট। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ জন। গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ জন। কাজে বের হতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। আর প্রচন্ড শীতের তীব্রতার কারণে কৃষকরা কাজ করার জন্য ঘর থেকে মোটেও বের হতে পারছেন না, অভাবী পথ শিশু, বৃদ্ধ লোকজন শীত বস্ত্রের অভাবে অতি কষ্টে দিনযাপন করছে।গরম কাপড়ের অভাবে দু:স্থ ও ছিন্নমূল মানুষ ঘর ছেড়ে বাহিরে কোথাও যেতে পারছে না। নিন্ম আয়ের লোকজন ও শ্রমিকরা চরম ভোগান্তিতে দিনতিপাত করছেন। দরিদ্র ও ছিন্নমুল এসব মানুষগুলো একটু গরম কাপড়ের আশায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের দিকে চেয়ে দিন অতিবাহিত করছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের এই সময়টায় ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলোই বেশি দেখা যায়। যেমন কাশি, অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি হয়ে থাকে। এ সময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় অনেকে অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের কাশি, কোল্ড অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক সময়ে শনাক্ত করা না গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতেও রূপ নিতে পারে। ঠাণ্ডার কারণে অনেকের টনসিল বেড়ে গিয়ে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি বেসরকারি ভাবে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীত বস্ত্র বিতারণ করা হয়েছে। আরও দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেস্কের ডাক্তাররা বলেন, মৌসুমী ফলমূল, শাকসবজি খেতে হবে; যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। করোনার এই দুর্যোগকালীন সময়ে সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শীতকালিন অনেক রোগের সাথে করোনার উপসর্গের মিল রয়েছে। এজন্য নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, মাস্ক ব্যবহারসহ সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি সকলের মেনে চলা উচিত।