বিনোদন ডেস্ক:
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে সরকারি অনুদানে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র 'মাইক' এর ফুটেজ দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক চুরি হওয়ায় অবিলম্বে তা উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই আবেদন করেন মাইক চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার মধ্যে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ভবনের ১১তলায় বি-বার্তা ও জাগরণ টিভির অফিসে দুষ্কৃতিকারীরা গোপনে হামলা চালায়। সেখানে ভাঙচুরসহ ড্রয়ারে রক্ষিত সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘মাইক’ চলচ্চিত্রের সর্বশেষ এডিটেড ফুটেজের পোর্টেবল হার্ডডিস্ক চুরি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বি-বার্তার সম্পাদকের ড্রয়ার থেকে বেতন ও ভাড়ার জন্য তোলা নগদ ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং একটি অ্যাপল ব্র্যান্ডের আইপ্যাড যার মূল্য ১ লাখ ১০ হাজার টাকাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যার সর্বমোট মূল্য ১ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সিনেমার অভিনয় শিল্পীরা। তারাও দ্রুত সিনেমার এডিটেড হার্ডডিস্কটি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
'মাইক' চলচ্চিত্রের পরিচালক ও প্রযোজক বলেন, পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম ও এসিস্ট্যান্ট ভাইস চেয়ারম্যান আসগর আলী ষড়যন্ত্র করে 'মাইক' এর সর্বশেষ এডিটেড ফুটেজের পোর্টেবল ড্রাইভটি চুরিতে মদদ জুগিয়েছে। কারণ হিসেবে জানান সাধারণ চোরের নিকট পোর্টেবল ড্রাইভ কী মূল্য আছে? তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাৎক্ষণিক সাড়া পেয়ে আমি আশায় বুক বেঁধেছিলাম, একটা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা চিহ্নিত হয়ে আইনের আওতায় আসবে এবং 'মাইক' চলচ্চিত্রের ফুটেজটি উদ্ধার হবে। কিন্তু এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও অপরাধীদের ধরার দৃশ্যমান কিছু পরিলক্ষিত হয়নি। তাই এই বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ভরসা রাখা দায় হয়ে উঠেছে।
অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী বলেন, সরকারের অনুদানে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। আর এই ছবির স্ক্রিপ্টও ভালো ছিল। সিনেমার হার্ডডিস্কটি নিয়ে গেছে। আজকে আমরা এখানে প্রতিবাদ করছি। প্রয়োজনে রাজপথে নামব।
এই চলচ্চিত্রের অভিনেতা নাদের চৌধুরী বলেন, সিনেমাটা যাতে দর্শকরা দেখতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হোক। ভবনে কিছু ঘটলে তার দায়-দায়িত্ব পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্সকে বহন করতে হবে। আমরা আশা করি, প্রশাসন চুরি হওয়া ফুটেজ উদ্ধার করবে এবং দেশের মানুষ ৭ মার্চের মধ্যে সিনেমাটি দেখতে পারবে। মাইকের অভিনেত্রী তানভীন সুইটি বলেন, এই বাংলাদেশের জন্ম কিভাবে হয়েছে তা তুলে ধরতে চাই। কিন্তু কে বা কারা ইতিহাস লুকিয়ে রাখতে চায়? ইতিহাস তুলে আনার এই ধারাকে বারবার থমকে দেয়া হচ্ছে! ২০২৩ সালে এসে কারা এই কাজটা করল? আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, এই চলচ্চিত্রে আরও অভিনয় করেছেন বরেণ্য অভিনেতা তারিক আনাম খান, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও জয়িতা মহলানবীশ প্রমুখ।