
সরদার আবু সাইদঃ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৫নংশিবপুর ইউনিয়নের কচুবিল, ঘিনারকুন, জালদা বিলে প্রায় ৪ বছর ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পরানদহা মৌজায় এক সময় ছিলো সরকারি খাল সেটা দখলে চলে গেছে কিছু মাছ চাষীদের তাই পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকার কৃষকরা জানান। জলাবদ্ধতায় বিল তিনটির প্রায় দেড় শত একর জমিতে ফসল করা যাচ্ছে না। এতে গ্রামের প্রায় ২শত গরিব কৃষক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এলাকাবাসী জানান, বিল তিনটির চারপাশের পাড়ে পরানদাহা গ্রাম অবস্থিত। বিল তিনটির ভেতরে ওই গ্রামের প্রায় ২শত কৃষকের দেড় শ একর ফসলি জমি রয়েছে। ৪ বছর আগে ওই জমিগুলোতে সারা বছরই নানা ধরনের শাক-সবজিসহ গম, সরিষা, আমন ও বোরো ধানের ব্যাপক ফলন হতো। তখন বর্ষার সময় বিলের পানি প্রাকৃতিক নিয়মে খাল দিয়ে সরে যেত। বিলটির ভেতরের জমিগুলো তখন শুকনো থাকতো। কিন্তু খালটি বর্তমানে কিছু মানুষের দখলে চলে যাওয়ায় পানি আর সরতে পারছে না। এবং মাছ চাষীরা ঘেরের পানি বাহিরে সেচে দিচ্ছে ফলে পানি জমে থাকায় বিল তিনটিতে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
বিল তিনটি ঘুরে দেখা গেছে, চারপাশের জমিতে পানি আর পানি। কোথাও হাঁটু পানি। আবার কোথাও কোমর পানি। কৃষকেরা বোরো ধানের চারা রোপন করতে পারছেন না। যদিও কিনারের কিছু জমিতে বোরো চারা রোপন করেছেন। তবে বেশির ভাগ জমিই পতিত রয়েছে। পরানদহা গ্রামের কৃষক আবুল হাসান বলেন, বিলের জমিগুলোতে ৪ বছর আগে সারা বছরই বিভিন্ন সবজিসহ ২টি ধানের ফসল হতো। এতে কৃষকেরা স্বাচ্ছন্দে সংসার চালাতে পারতেন। এখন জলাবদ্ধতার কারণে কোনো ফসলই ভালভাবে ফলানো যাচ্ছে না। এতে গ্রামের প্রায় ২শত গরিব কৃষক এখন খুব কষ্টে জীবনযাপন করছেন। পানি চলাচলের খালটি দখল হয়ে যাওয়ায় আমাদের বিলের পানি সরছে না। ফলে এ জলাবদ্ধতা।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আকবর আলী বলেন, ১৯৭২ সালে দেশ স্বাধীনের পর তৎকালীন মোমতাজ আহম্মদে এমপি থাকতে উক্ত খালটি খনন করা হয়েছিলো তবে পরে সেটা দখল হতে হতে আর খালের অস্তিত্ব তেমন নেই পানি সরানোর কোন ব্যাবস্থাও নেই। পরানদহা গ্রামের শাহিনুর বলেন ,সারাবছর জলাবদ্ধতায় ফসল হচ্ছেনা যদি জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন ব্যাবস্থা করা যায় তাহলে গ্রামের শত শত গরিব কৃষক চাষাবাদ করে আবার আগের মত ফসল-আবাদ করে খেতে পারতো। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, বর্ষার সময়ের পানি এবং ঘের মালিকদের সেচ দেওয়া পানি বিলের জমিগুলোতে প্রবেশ করে। কিন্তু নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি নিষ্কাশনের জন্য পূর্বের সেই খালটি খনন করলে এ জলাবদ্ধতা দূর হয়ে যাবে। এজন্য আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।