তালা অফিস থেকে নজরুল ইসলাম: তালা উপজেলার কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকাল ৯টা বেজে গেলেও ক্লাস শুরু হয় না, আবার কোথাও শিক্ষকরা দেরিতে আসেন। কেউ কেউ সময় শেষ হওয়ার আগেই ক্লাস শেষ করে দেন। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই দীর্ঘদিনের অনিয়মের কারণে শিক্ষার মান ক্রমেই নি¤œমুখী হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মনোযোগ কমে যাচ্ছে পড়া লেখায়, পাঠ্যদানের ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, আর পরীক্ষার প্রস্তুতিও হচ্ছে দুর্বল। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর পাঠ্যদানে এধরনের অসংঙ্গতি দূরীকরণে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রতিদিন শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত “শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা”-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পরিচালনা করতে হবে। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ইতোপূর্বে নির্দেশ প্রদান করেছিলেন।
তবে সম্প্রতি দেখা গেছে, তালা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সময়সূচি ভিন্নভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কিছু স্কুলে পাঠদান সকাল ১০টা বা ১১টা থেকে শুরু হয়, আবার কিছু স্কুল দুপুর ২টার আগেই শেষ হয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বিঘিœত হচ্ছে এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যও পূরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপা রানী সরকার জানান, “শ্রেণি কার্যক্রমে নির্দিষ্ট সময় মানা খুবই জরুরী। এটি শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এই সময়সূচি অনুযায়ী শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও একাডেমিক সুপারভাইজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করবেন। যাতে নির্ধারিত সময়সূচি যথাযথভাবে মানা হয়।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতে, নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুসরণ করলে শিক্ষার্থীরা নিয়মিতভাবে পাঠ্যগ্রহনে অংশগ্রহণ করবে এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন সম্ভব হবে। তবে কতিপয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও নির্দেশনা মানায় ঢিলেঢালা মনোভাব গ্রহণ করছে বলে পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্দেশনা অমান্যকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।