
হাবিবুর রহমান, সাতক্ষীরা থেকে: ঘুষের টাকা ভাগা-ভাগি নিয়ে শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন তারই সহকারী চার শিক্ষা অফিসার। অপর দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ৫০ হাজার টাকা অফার করে বিপাকে পড়েছেন সহকরী শিক্ষা অফিসার শাহা-আলম। উভয় ঘটনা এখন শ্যামনগরে টক অব দ্যা টাউন।
শ্যামনগর থানার সাবইন্সপেক্টার দিপ্তেশ সাতনদীকে জানান, ৪ জন সহকারী শিক্ষা অফিসার উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলনের বিরুদ্ধে গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার থানায় ৯ নম্বর সাধারণ ডাইরী অন্তভূক্ত করেছেন। জিডিই’র গর্ভে সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহা-আলম,আজহারুল ইসলাম, সোহাগ হোসেন ও সোহাগ আলম বলেছেন, তাদেইর শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলন তাদেরকে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফ্যাঁসাতে পারেন। এমনকি মহিলা সংক্রান্ত মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলার সৃষ্টি করতে পারেন।
তিনি এও বলেন, অভিযোগটি গুরুত্ব বহন করে বিধায় তা তদন্ত করার জন্য আদালতের অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
একাধিক শিক্ষা অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে সাংবাদিকদের কাছে। তিনি তাদের চার জনকে শায়েস্তা করতে ফন্ধি ফিকির করে চলেছেন।
এছাড়া অচেনা মহিলাদের আনা গোনা দেখেছেন তারা শিক্ষা অফিসারের আবাসিকে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার একজন কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও জানিয়েছেন। এছাড়া শিক্ষা অফিসার সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহা-আলমকে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকীও দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
উপজেলা সদরের শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে ঘুষের টাকার ভাগা ভাগি নিয়ে ৫ জন শিক্ষা অফিসার বৈঠাকে বসেন। সেখানেও ৪ জন সহকারী শিক্ষা অফিসারের সাথে শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলনের বচসা হয়। শিক্ষকদের দাবীর মুখে ঘুষের কোটি টাকা থেকে শিক্ষক সমিতির ১০ লক্ষ টাকা দেয়ার প্রস্তাব করেন সহকারী শিক্ষা অফিসার।
এক পর্যায়ে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান ও চারজন সহকারী শিক্ষা অফিসার এর মধ্যকার বিরোধ মিমাংসা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ বিরোধ নিস্পতিতে এক মত হয়। ফলে ওই দিন চার জন শিক্ষা অফিসার থানায় গিয়ে আপদার করে বলেন, জিডিই টা প্রত্যাহার করতে চাই। জিডিই প্রত্যাহার হয়না মর্মে জানিয়ে দেন অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হুদা ।
এদিকে শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান মিলন ঘুষের টাকা থেকে সহকারী শিক্ষা অফিস শাহা-আলমকে দিয়ে ৫০ হাজার টাকা পাঠান উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তা প্রত্যাখান করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যাকে জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান এবিষয়ে অভিযোগ করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের কাছে। উভয় বিষয় এখন শ্যামনগরে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।