স্টাফ রিপোর্টার, দেবহাটা: শাঁখরা কোমরপুর আব্দুল গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে ভোট গ্রহণের কথা ছিল। সোমবার সকাল হতে স্কুলের অভিভাবক সদস্যরা যথারীতি ভোট দিতে স্কুলের গেটে উপস্থিত হয়ে দেখেন, স্কুলের মূল গেটে তালা মারা। স্কুলের মূল গেটের দেওয়ালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত শাঁখরা কোমরপুর আব্দুল গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন স্থগিতের নোটিশ দেখা যায়। নির্বাচন স্থগিতের খবর নির্বাচনের আগের দিন স্কুলের অভিভাবক সদস্যদের না জানানোর কারনে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। কারন অভিভাবকরা কাজকর্ম বাদ রেখে ভোট দিতে এসেছে। এব্যাপারে সদর উপজেলা মাধ্যমকি শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুইটি প্যানেলের মধ্যে বিবাদের সম্ভবনা থাকার ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে নির্বাচন স্থগিতের আবেদন করায় আমি জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতবেক নির্বাচন স্থগিত করেছি। পরে আলোচনা করে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করা হবে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফতেমা-তুজ-জোহরার কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি আবেদনেরে প্রেক্ষিতে দুইটি নির্বাচনী প্যানেলের মধ্যে ঝামেলা হওয়ার আশঙ্খায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমান স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আকবর হোসেন বলেন, সংঘর্ষের আশংকায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এসময় অভিভাবক সদস্যপ্রার্থী আসাদুজ্জামান পলাশ, আসাদুজ্জামান মিলন, কবির উদ্দিন, হাবিবুর রহমান জানান, শাঁখরা কোমরপুর আব্দুল গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক আহমেদ শরীফ ইকবাল একজন দুর্নীতিবাজ তিনি স্কুলের তহবিল তছরুপসহ বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি অত্র বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে প্রতিবার তার পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টা চালান। কিন্তু এবার ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর থেকে এলাকার সচেতন অভিভাবক মহল নির্বাচনের মাধ্যমে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনী তফসিল বর্ণিত সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। যথারীতি নির্বাচনের জন্য দুটি প্যানেল ও প্রস্তুত হয়। কিন্তু স্কুলের চতুরবাজ প্রধান শিক্ষক দেখেন নির্বাচন হলে তার পক্ষের অভিভাবক সদস্যরা ম্যানেজিং কমিটিতে নির্বাচিত হবেনা, তার পক্ষের অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত না হলে সভাপতি তার বিপক্ষের লোক হবে। তার কারনে স্কুলের সকল অনিয়ম, দুর্নীতি ধরা পড়ে যাবে। প্রধান শিক্ষক আহমেদ শরীফ ইকবাল এই নির্বাচন বন্ধ করার জন্য শুরু করেন বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ। কোন উপায় না পেয়ে তার অনুসারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তিনি স্কুলে নির্বাচনের দিন দুই পক্ষের সংঘর্ষের আশাঙ্খার অভিযোগ তুলে নির্বাচন স্থগিতের জন্য আবেদন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অভিযোগের ভিত্তিতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা বিধি ২০০৯ এর ২০(১) ধারা মতাবেক ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের ভোটগ্রহন কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করেন। ভোট দিতে আসা অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে মিলন হোসেন, মহাদেব, মিঠুন, কওছার সহ অভিভাবকরা উপস্থিত হয়ে বলেন, আমরা ভোটাররা সম্পূর্ন আনন্দঘন পরিবেশে ভোট দিতে উপস্থিত হয়েছিলাম। নির্বাচনের মধ্যে বিবাদের সমূহ সম্ভবনা দেখা দিয়েছে অভিযোগটি সত্য না। তারা আরোও বলেন, যেহেতু দুটি প্যানেলে নির্বাচন হচ্ছে এখানে প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। কিন্তু নির্বাচন উপলক্ষ্যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটনা ঘটার সম্ভবনা আমরা দেখি নাই। প্রধান শিক্ষক অপ্রীতিকর ঘটনার আভাস পেলে উচিৎ ছিলো ভোটের পূর্বে কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনকে অবহিত করে নির্বাচন করা। এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অতিদ্রুত সুষ্ঠ নির্বাচনের জোর দাবী জানান।