
স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশ ফুটবল দল এশিয়াকাপ বাছাই ম্যাচ খেলবে অক্টোবর-নভেম্বরে। আগস্টে গিয়ে অনুশীলনে নামার পরিকল্পনা। একক গেম অ্যাথলেটিক্সও আগস্টের আগে মাঠে নামবে না। দেশের অন্য ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোও এগোচ্ছে অনুরূপ ভাবনা নিয়ে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সেটুকুও ভাবতে পারছে না। দেশের কভিড পরিস্থিতির বাস্তবতায় অনুশীলন শুরু করার মতো সাহস পাচ্ছেন না কর্মকর্তারা। করোনার সংক্রমণ না কমা পর্যন্ত ধৈর্য ধরার পরামর্শ বেশিরভাগ পরিচালকের।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সিরিজগুলো একের পর এক স্থগিত করা হচ্ছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরারও সুযোগ নেই। তবে অনলাইনে অফিসিয়াল কার্যক্রম চালু রেখেছে বিসিবি। খেলার মাঠগুলোও আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সবুজ ও সতেজ। বিশ্রাম পাওয়া মাঠগুলোকে একটা সময়ে হয়তো ছবির মতো দেখাবে। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার হবে দেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটারদের। বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খানের মতে, ‘কভিড না কমা পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না। কতদিন এই ভাইরাস থাকবে, কেউ জানে না। পুরোপুরি না গেলেও একটা সময়ে নিশ্চয়ই ভাইরাসের প্রকোপ কমবে। তেমন কিছু হলে আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।’
কভিড বাস্তবতার ভেতরেই কিছু কিছু দেশ মাঠের ক্রিকেটে ফেরার পরিকল্পনা করছে। ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজ শুরু হবে আগামী মাসে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) গতকাল এক টুইট বার্তায় জানায়, সরকারের অনুমোদন নিয়েই ক্রিকেট শুরু করছে তারা। ভারত, বাংলাদেশ খেলতে রাজি না হওয়ায় শ্রীলঙ্কাও পরিকল্পনা নিয়েছে টি২০ টুর্নামেন্ট করার। পাকিস্তান ক্রিকেট দল প্রস্তুতি নিচ্ছে ইংল্যান্ড সফরের। মাঠে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া।
আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা প্র্যাকটিস শুরু করেছে অনেক আগে। বিশ্বের সব দেশ ক্রিকেট শুরু করলে বসে থাকতে পারবে না বিসিবি। এ ব্যাপারে বোর্ড পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘অন্য দেশের মানুষ নিয়ম মানে। যে কারণে কভিড নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমাদের দেশের মানুষ নিয়ম মানে না। তাই খেলা শুরু করলে বিপদের কারণ হয়ে যেতে পারে। সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের। আরও কয়েক মাস হয়তো দেখতে হবে।’ পরিচালক মাহাবুবুল আনাম আবার ধৈর্য ধরার পক্ষে, ‘দেশের যা অবস্থা তাতে খেলাধুলা শুরু করার মতো অবস্থা নেই। সিরিজগুলো স্থগিত করা ছাড়া উপায় ছিল না। সংক্রমণ না কমা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, সবার আগে জীবন।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কভিড-১৯ স্থায়ী হবে লম্বা সময়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালাতে হবে জীবন-জীবিকার কাজ। বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনাও তাই। এই বাস্তবতায় কবে খেলা শুরু করা যেতে পারে জানতে চাওয়া হলে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও নির্বাচক হাবিবুল বাশার বলেন, ‘কভিড কতদিন থাকবে সেটা বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন। তবে দেশে সংক্রমণ না কমলে খেলা শুরু করা কঠিন।
এরই মধ্যে কয়েকজন ক্রিকেটার কভিড আক্রান্ত হয়েছেন। আগস্টের আগে হয়তো কোনো কিছু চিন্তা করা যাচ্ছে না।’ দেশে ক্রিকেট চর্চা হোক বা না হোক ফুটবল চিন্তা-ভাবনার দিক থেকে একটু হলেও এগিয়ে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ জানান, জাতীয় দলের ম্যাচ অক্টোবর নভেম্বরে হওয়ায় হাতে যথেষ্ট সময় আছে। আগস্ট মাসের দিকে ক্যাম্প শুরু করলে দল প্রস্তুত করা যাবে। ফুটবলের মতো ক্রিকেটের সামনে বাধ্যতামূলক কোনো টার্গেট নেই। তাই খেলায় ফেরার ভাবনাও ঢিলেঢালা।