জাতীয় ডেস্ক:
রাজধানীর পূর্ব রামপুরায় স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দিনগত রাতে পূর্ব রামপুরার তিতাস রোডের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত ব্যক্তিরা হলেন মো. জুয়েল (২৮) ও তার স্ত্রী মোসা. নাসরিন (২২)। পরিবারের দাবি, অভাব অনটনের কারণে হতাশা থেকে তারা আত্মহত্যা করেছেন।
রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চম্পক চক্রবর্তী লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমরা রাত ২টার দিকে সংবাদ পেয়ে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মৃত নাসরিনের ভাই টিটু খন্দকার জানিয়েছেন, চার বছর আগে নাসরিন ও জুয়েলের বিয়ে হয়। তারা গাজীপুরে থাকতেন। তাদের একটি সন্তান ছিল, সন্তানটি সাত মাস বয়সে মারা যায়। নাসরিন বাসাবাড়িতে কাজ করতেন, তার স্বামী জুয়েল লেগুনা চালাতেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার কারণে সম্প্রতি জুয়েলের কাজ বন্ধ হয়ে যায়, তিনি বেকার অবস্থায় বসেছিলেন। সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিলো।
টিটু বলেন, এই অবস্থা দেখে তাদের আট মাস যাবত রামপুরায় আমার কাছে নিয়ে আসি। এখানে আমার পাশে একটি রুম দিয়ে দেই। নাসরিন বাসাবাড়িতে কাজ করতো। পাঁচ থেকে সাত দিন যাবত সে জ্বরে ভুগছিল। ডাক্তার দেখিয়েছি। চিকিৎসকরা বলেছেন এটা ভাইরাস জ্বর। কিছু দিন সময় লাগবে। তাদের খাওয়া দাওয়া আমার বাসা থেকেই দিতাম।
তিনি আরও বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক ১২টার পর বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে জানতে চাই তারা খাওয়া দাওয়া করেছে কিনা। সে জানায় তারা তো রান্নাই করেনি। পরে তাদের রুমের সামনে গিয়ে দরজা বন্ধ পাই। ডাকাডাকি করে কোনও সারাশব্দ না পেয়ে দরজার ফাঁকা দিয়ে দেখতে পাই, তারা দুজনেই ঝুলছে। তাৎক্ষণিক বাড়ির মালিক ও আশপাশের লোকজনদের জানাই। পুলিশকে সংবাদ দেওয়া হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে দরজার পাল্লা খুলে ফেলা হয়।
তারা ফ্যানের হুকের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে ওড়নার দুই মাথায় দুই জন ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। পরে পুলিশ ও সিআইডি তাদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে হওয়ার পর সকালে লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
নাসরিন কুড়িগ্রাম জেলার দক্ষিণ কাটি গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে। কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার বুবইল গ্রামের আজাদুল খন্দকারের ছেলে জুয়েল।