
আতিয়ার রহমান, মণিরামপুর (যশোর): অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতিসহ সাত অভিযোগে রাজগঞ্জ শহীদ স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, কোন অভিযোগই সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক। তাকে ফাঁসাতে চক্রান্ত করেই এসব খোড়া অভিযোগ এনে বরখাস্ত করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সোহেল রানা। বরখাস্তের রেজুলেশনে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধির কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সভাপতির বিরুদ্ধে। যে কারনে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির ওই দুই সদস্য ( অভিবাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধি) পদত্যাগ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, স্থানীয় ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহেল ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট প্রথম মেয়াদে এবং ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। প্রথম মেয়াদে সভাপতি থাকাকালীন সোহেল রানা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আনা না হলেও দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর নিয়মিত কমিটির সময় (পূর্বের কমিটি) বিদ্যালয় লাগোয়া দোকান ঘর ভাড়া, অগ্রিম বাবদ ৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত দুইটি অভিযোগ, বিদ্যালয়ে বালু ভরাট, স্কুল ভবনে রং করা, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতির অনুদানের ৪ লাখ টাকাসহ রেজুলেশন খাতা নষ্ট করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তারিখ উল্লেখ করে মিটিং দেখিয়ে কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিভাবক সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, তিনি গত ২৯ এপ্রিল শারীরিক অসুস্থ্যতজনিত কারনে কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
শিক্ষক প্রতিনিধি ফজলুর রহমান বলেন, তিনিও ৬ জুলাই লিখিত পদত্যাগ সভাপতির কাছে জমা দিতে গেলে তার কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের বরখাস্তের রেজুলেশনে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দোকান ঘর বাবাদ ৯ লাখ খরচের সমুদয় ব্যয় ভাউচারসহ প্রকল্প ব্যায়ের গঠিত কমিটি মারফত খাতওয়ারি নিয়মতি কমিটির ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল ও ২০১৮ সালের ২০ আগস্ট-এ অনুষ্ঠিত সভায় রেজুলেশন থাকলেও সভাপতি সোহেল রানা তা মানতে নারাজ।
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন, তিনি কোন টাকা বিদ্যালয়ে দান করেননি। সভাপতির অভিযোগকৃত ৪ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের নয়। এ টাকা শিক্ষকদের কল্যান সমিতির, যা জমা করা হয়েছিল।
নিয়মিত কমিটির সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল চন্টা বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নে গৃহীত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে গঠিত কমিটির মাধ্যমে সব খরচের ভাউচার ও রেজুলেশন করাসহ ব্যায়ের অনুমোদন করা হয়।
বর্তমান সভাপতি সোহেল রানা নগদ গ্রহন নগদ খরচের বিধান নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়ম মেনেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।