নতুন কারিকুলামে নবম-দশম শ্রেণিতে থাকছে না বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগ। স্কুল পর্যায়ে সবার জন্য হবে সমন্বিত কারিকুলাম। যা ২০২২ সাল থেকে কার্যকর করা হবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ তথ্য জানান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় স‚ত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে ২০১৬ সালে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের নিয়ে ওই বছরের ২৫ ও ২৬ নভেম্বর কক্সবাজারে দু’দিনের আবাসিক কর্মশালা হয়। এতে তারা বেশকিছু সুপারিশ করেন। এরপর সুপারিশ বাস্তবায়নে কয়েকটি সাব-কমিটিও গঠন করা হয়। শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা সাব-কমিটি ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ৮ দফা প্রস্তাব করেছিলো। প্রস্তাবে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষাক্রম বিষয়বস্তুর গুরুত্ব অনুসারে তিন গুচ্ছে ভাগ করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেয়া হয়। নবম-দশম শ্রেণিতে পাঁচটি বাধ্যতাম‚লক বিষয় ছাড়া ‘গ’ গুচ্ছ থেকে দুটি ও ‘ঘ’ গুচ্ছ থেকে দুটি বা তিনটি বিষয় নিতে হবে। ফলে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪টি থেকে চারটি বিষয় কম যাবে। অর্থাৎ ঐচ্ছিক বিষয়সহ মোট ১০টি বিষয়ের পাবলিক পরীক্ষা হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আগে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের জন্য পৃথক সময়ে কারিকুলাম পরিবর্তন হওয়ার কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কারিকুলামে কোনো সমন্বয় থাকত না। এবারই একসঙ্গে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের কারিকুলাম পরিমার্জন করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হবে না।’ ৮ম শ্রেণি পাস করে একজন শিক্ষার্থীর জন্য বিভাগ নির্ধারণ করা কতটা বোধগম্য এ বিষয়েও নানা প্রশ্ন আছে। এছাড়াও বিভাগ পরিবর্তনের ফলে একজন মানবিকের শিক্ষার্থীর যেমন বাণিজ্যর বিষয় সম্পর্কে ধারণা পায় না, তেমনি বিজ্ঞানের ছাত্রদের ইতিহাস জানা হয়ে উঠে না। সামগ্রিক ও জ্ঞান নির্ভর শিক্ষা কার্যক্রমের জন্যই এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিদেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সুত্র জানায়।
এই নতুন কারিকুলামটা হবে যোগ্যতা ভিত্তিক কারিকুলাম। এটির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রথম প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে একই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হবে। এর ফলে একজন শিক্ষার্থী বিশ্ব শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে বিশ্ব শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে উঠবে।
এটা একটি প্রসংসনীয় উদ্যোগ। সমন্বিত কারিকুলামটি সময়উপোযোগী এবং বাস্তব মুখি পরিকল্পনা। মানমম্মত শিক্ষা উন্নত জাতী গঠলে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
দির্ঘদিন প্রতিক্ষার পর সরকারের এহেন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। এই সিদ্ধান্তের ফলে একজন শিক্ষার্থী মধ্যমিক পর্যন্ত সকল বিষয়ে দক্ষতার প্রমান দিতে পারবে। একই সাথে শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পাশের পরে উচ্চমাধমিকে বিষয় নিদ্ধারণে সক্ষম হবে। কারণ ইতোপূবে অভিভাবর্ক কর্তৃক গ্রুপ নির্ধারণ করে দেওয়াটা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টকর হয়ে যেত। সেক্ষেত্রে তারা পরিক্ষায় কাঙ্খিত ফলাফল পেতে ব্যর্থ হতো বলে অনেক শিক্ষকের অভিমত।