আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মিয়ানমারের সাগাংই অঞ্চলে একটি কমিউনিটি হলে বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবারের হামলায় নারী ও শিশুসহ ১০০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জাও মিন তুন গভীর রাতে অভিযান চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পা জি গি গ্রামে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একটি অফিস উদ্বোধনের সময় এ হামলা চালানো হয়।
মঙ্গলবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি নিউজ এজেন্সিকে এই মুখপাত্র আরও বলেন, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন ইউনিফর্ম পরা অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধা ছিল। তবে বেসামরিক পোশাক পরা কিছু লোকও থাকতে পারে।
সামরিক বিমান হামলায় এত লোক নিহতের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সেস পিডিএফ বিদ্রোহী গোষ্ঠী সেখানে মাইন পুতে রাখার কারণে হতাহত বেড়েছে।
উদ্ধারকারীদের বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৮০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হামলা ভয়াবহ হওয়ার কারণে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মঙ্গলবার ভোরে জঙ্গিবিমান কমিউনিটি হলে বোমা বর্ষণ করে। বেঁচে থাকা লোকদের লক্ষ্য করে কিছুক্ষণ পর হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ চালালে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়। অঞ্চলটির সাবেক বিধায়ক উ নে জিন লাত ইরাবতি সংবামাধ্যমকে বলেছেন, শিশুসহ কমপক্ষে বহু লোক প্রাণ হারিয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তবে ১০০ জনের বেশি নিহতের ঘটনায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। ২০২১ সালে সু চি’র সরকাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত এটিকে সবচেয়ে বড় ধরনের বিমান হামলা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবারের জান্তা হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে জবাবদিহির আওতায় আনতে মিয়ানমারের শাসকদের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থেনিও গুতেরেসে। হামলায় আহতদের জরুরি চিকিৎসা সেবা ও সাহায্যেরও সুযোগ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন তিনি। মিয়ানমারে এমন হামলায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০২১ সালে অং সান সু চি'র সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। এরপরই থেকে দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন চলছে। ক্ষমতা দখলের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০০ বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা সরকার।