আহাদুর রহমান জনি: ব্যকটেরিয়া জনিত প্রাচীন রোগ হলো যক্ষ্মা। যক্ষ্মা কমিয়ে আনতে সরকার ‘টিপিটি’ নামের একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে ২০২৬ এর মধ্যে যক্ষ্মার প্রকোপ শূণ্যের কোঠায় আসবে। যক্ষ্মা প্রতিরোধে, রোগী সনাক্তকরণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির কথাগুলো বলেছিলেন সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন শাফায়াত।
‘বিনিয়োগ করি যক্ষ্মা নির্মূলে, জীবন বাচাই সবাই মিলে’ স্লোগানকে সামনে রেখে রোববার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভাঘরে নাটাবের আয়োজনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফরহাদ জামিল, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের ডা. ত্রিনেত্র ঘোষ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি এম কামরুজ্জামান, ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি বরুণ ব্যানার্জী প্রমুখ।
প্রধান অতিথি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসময় আরও বলেন, আপনাদের মাধ্যমেই যক্ষ্মার বিরুদ্ধে শক্তিশালী জনসচেতনতা গড়ে উঠবে। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সহায়াতা গুরুত্বপূর্ণ।
‘টিপিটি’ সম্পর্কে তিনি তথ্য দিয়ে বলেন, যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যাক্তিদের পরিবার ও তার সাথে ক্লোজ কন্টাক্টে থাকা ব্যক্তিদেরও একটি চিকিৎসা পদ্ধতির আওতায় আনার জন্য এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগির সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬১ হাজার। এরমধ্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে ২ লক্ষ ৪২ হাজার ৯৪২ জনকে। জেলায় এ পর্যন্ত দুই হাজারের অধিক যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তি আছে। যাদের চিকিৎসা চলমান আছে।
যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যাক্তিদের পরিবারের কারও যক্ষ্মা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের মাঝেও এর জীবানু থাকতে পারে। ফলে সহজেই তারা এতে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এর সঠিক কোন পরিসংখ্যান তিনি দিতে পারেননি।
এঅন্য একটি প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন জানান, সাধারণত আমরা সবাই টিবি ব্যকটেরিয়া বহন করে থাকি। যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে তখনই সাধারণত টিবি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। টিবি থাকা অবস্থায় কোভিড হতে পারে। ডায়াবেটিস ও এইডস রোগীদের মধ্যে যক্ষ্মার প্রকোপ অনেক বেশি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আমাদের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, দৈনিক কাফেলার চীফ রিপোর্টার এম ঈদুজ্জামান ইদ্রিস, বার্তা সম্পাদক এম রফিক, আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শেখ ফরিদ আহমেদ ময়না, এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি শাহীন গোলদার, নাটাব সাতক্ষীরা জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল ইসলাম, সিভিল সার্জন অফিসের ডিপিও উজ্জ্বল কুমার পাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্বাবধায়ন ও সঞ্চালনায় ছিলেন নাটাব কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিনিধি তরুণ কুমার বিশ্বাস।
যক্ষ্মারোগের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যক্ষ্মা একটি জীবানু ঘঠিত সংক্রমক রোগ। এক নাগাড়ে দু সপ্তাহ বা তার অধিক সময় ধরে কাশি থাকলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে, রোগ সনাক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত সঠিক মাত্রায় ও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঔষধ সেবনের মাধ্যমে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভালো হয়। হাঁসি কাশি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করতে হবে। পরিবারে একজন যক্ষ্মা রোগী থাকলে পরিবারের অন্যদেরও বিশেষ করে শিশু এবং প্রাপ্ত বয়ষ্কদের যদি এক সপ্তাহ যাবত কাশি থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
যক্ষ্মার বিরুদ্ধে শক্তিশালী জনসচেতনতা গড়তে হবে
পূর্ববর্তী পোস্ট