সৈকতের মৃত্যু নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অপপ্রচার;
ফ্লাইওভার থেকে পড়েই মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে সৈকত;
আহাদুর রহমান জনি: ভাঙ্গায় ফ্লাইওভার থেকে পড়ে নিহত হয় বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী পরীক্ষার্থী এহসানুল হক সৈকত। কিন্তু নিছক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করা সৈকতের মৃত্যুর ঘটনা ভুল তথ্য উপস্থাপন করে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারিত হয় যা দুঃখজনক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের আপন চাচাতো দুই বোন একই স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া সুলতানা ও ফারজানা সুলতানা (মুক্তা) সহ তার ঘনিষ্ঠ পাঁচ সহপাঠি আশিক মুজাহিদ, নাহিদ হোসেন, আরাফাত রহমান ও আশিকুর রহমানের জানায়, ‘গত বৃহস্পতিবার (৯,ফেব্রুয়ারি) বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক শিক্ষা সফরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের মাজার জিয়ারত শেষে দুপুরে খাবার খেয়ে তারা পূর্বনির্ধারিত ভাঙ্গা গোলচত্ত¡রে রওনা দেয়। ভাঙ্গা গোলচত্ত¡রে শিক্ষকদের তত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা গোলচত্ত¡রে অবস্থান নেয়। এ সময় হঠাৎ লোডশেডিয়ের কারণে চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সে সময় অসাবধানতা বশত শিক্ষার্থী এহাসানুল হক সৈকত ওভারব্রীজের রেলিং থেকে নিচে পড়ে গিয়ে মাথার পেছনে গুরুতর আঘাত পায়। শিক্ষকরা তাকে দ্রæত হাসপাতালে নিয়ে যায়। ’
বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিলুজ্জামান জানান, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অনতিবিলম্বে আমি ও আরও একজন সহকারি শিক্ষক সৈকতকে নিয়ে দ্রæত ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে রেফার করে। এম্বুলেন্স যোগে সৈকতকে নিয়ে দ্রæত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রওনা হই। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সৈকতকে মৃত ঘোষণা করে।’
নিহতের আপন ভগ্নীপতি উত্তরকাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ ফখরুল আলম জানান, ‘স্কুলের বার্ষিক শিক্ষা সফরে যায় সৈকত। কিন্তু ভাঙ্গায় ওভারব্রীজ থেকে পড়ে সে গুরুতর আহত হয়। তার দুই চাচাত বোন ও শিক্ষকরা বাড়িতে খবর দেয়। সৈকতের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তার বড় ভাই ইনজামুল হক শুভ ও তার খালাত ভাই ঢাকা থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে রওনা দেয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা মৃত ঘোষণা করলে দুই ভাই শিক্ষকরা তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে। এ দুর্ঘটনায় আমাদের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই আজ (শুক্রবার) জানাযা শেষে সৈকতকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। তবে টিআরপি বাড়ানোর জন্য সৈকতকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদগুলো আমাদের পরিবারের হৃদয়ে আঘাত করেছে। যা বিব্রতকর ও দুঃখজনক। ’