হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: ভারতীয় ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাঁজা সহ ভয়াল মাদকের আগ্রাসী থাবায় কালিগঞ্জ উপজেলা ধংসের বিপন্ন জনপদে পরিনত হয়েছে। হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। উড়তি বয়সী যুবক মাদক সেবীদের কাছে ইয়াবা, ফেন্সিডিল এখন হট কেকের মতো। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেদারসে চলছে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা বেচা-কেনা। বাজারে বসে অথবা মোবাইলে বিকাশে টাকা দিয়ে নিদিষ্ট লোকেশনে, বাড়ী, ঝোপ, বাঁশ বাগানে নিদিষ্ট সংকেতে পৌছায়ে গেলে মিলবে আখাংকিত ফেন্সিডিল, ইয়াবা আগে এ সমস্ত ব্যবসা উপজেলার নাম করা তালিকা ভুক্ত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের হাট, ডাক নাম থাকলেও তাদের নাম ব্যবহার করে ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের র্শীষ নেতা, জনপ্রতিনিধিদের ছত্র ছায়ায় থেকে মাদক সেবীরা এখন নব্য মাদক ব্যবসায়ী বনে গেছে। কালিগঞ্জ উপজেলার মাদক সমৃদ্ধ এলাকা বলে পরিচিত কামদেবপুর, খাঁরহাট, শুইলপুর, খানজিয়া, বাগবাটী, নলতা, পূর্ব নলতা, ঘোনা কাশেমপুর, সেহারা, কালিগঞ্জ বাস টার্মিনাল, উজিরপুর, কৃষ্ণনগর, মৌতলা, বাজাগ্রাম, রতনপুর,কদমতলা সহ একাধিক এলাকা এখন বহু নব্য মাদক ব্যবসায়ী অবাধে ব্যবসা করে যাচ্ছে। রাজধনী হতে নেতারা এলকায় আসলে এই সমস্ত নব্য মাদক ব্যবসায়ীরা কালো চশমা চোখে দিয়ে সফর সঙ্গী হিসাবে পাশে দাড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে নিজের উপস্থিতি, পরিচয় জাহির করে নিবিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে গেলেও প্রশাসন হঠাৎ করে কিছুর করা সাহস পায় না। এই উঠতি মাদক ব্যবসায়ী ঘোন ঘোন পাটি ধরে থানায় আসে এবং বিচার শালিস করে নিজেদের নেতা হিসাবে জাহির করে। যে কারণে স্থানীয় পুলিশ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), মাদক পাচার, বিক্রি বন্ধে তৎপর থাকলেও মাদক বেচা কেনা থেমে নেই বরং বেড়েই চলেছে। ক্ষমতাশীন দল তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের বেশির ভাগ সভাপতি, সম্পাদক সহ বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা এই সমস্ত মাদক ব্যবসায়ীদের সেবক ও খদ্দের। দুপুর এবং সন্ধায় বেশির ভাগ দেখা মেলে এই সমস্ত মাদক ব্যবসায়ীদের আড্ডায়। ফেন্সিডিল, ইয়াবার দাম বেশি হলেও সহজ লভ্য হওয়ায় বেশি বেশি নেশায় আশাক্ত হয়ে পড়ছে। বাঁশ-বাগান, নির্জন বাগান, ঝোপ জঙ্গল, বাসা বাড়ী, অফিস আদালতের টয়লেট, আনাছে-কানাছে, অলীগলি, পাড়া-মহল্লায় সর্বত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে ইয়াবা, ফেন্সিডিল বিক্রি করছে। এক কথায় মাদকে ভাসছে গোটা কালিগঞ্জ উপজেলা। উপজেলার বিভিন্ন একাধিক ব্যাক্তি, অবিভাবক জানান উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় অধ’শতক বাণিজ্যিক পয়েন্টে মাদক দ্রব্য বিক্রি হচ্ছে। মাদক দ্রব্যের র্শীষে রয়েছে নবাগত ইয়াবা, তার পর ফেন্সিডিল, গাঁজা, মদ। আগে ফেন্সিডিলের ব্যপক চাহিদা থাকলেও বর্তমান তাও কমে এসেছে। জায়গা দখল করে নিয়েছে ইয়াবা। বর্তমান এক বোতল ফেন্সিডিলের দাম সাত’শ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ডাব্লিউ ওয়াই (চম্পা) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা পিছ অর্থ্যাৎ ইয়াবা। ইদানিং স্কুল কলেজের ছেলেরা বেশি আশাক্ত হয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী কালিগঞ্জ উপজেলার ইছামতি, কালিন্দী নদী ছাড়াও বিভিন্ন চোরা ঘাট দিয়ে কোথাও নদী সাঁতরিয়ে নিয়ে আসা সহ মাদক প্রবেশ করছে। উপজেলার সীমান্ত বর্তী খানজিয়া, শুইলপুর, খারহাট, বসন্তপুর, উকশা, ড্যামরাইল, বাঁশ ঝাড়িয়া, খড়মি অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাদক পাচার করা এবং বহনের কাজে বেশি মহিলাদের ব্যবহার করে। বহনকারি মহিলা অধিকাংশ স্বামী পরিতাক্ত। এ সমস্ত এলকায় কিছু কিছু মাদক ব্যবসায়ী মাঝে মধ্যে আটক হলেও কোন ভাবে বন্ধ হচ্ছে না বেচা-কেনা। স্থানীয় থানা পুলিশের হাতে মাঝে মধ্যে মাদক সহ সেবনকারিরা ধরা পড়লেও মূল পাচারকারী ব্যবসায়ী থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। যে কারণে কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না মাদক কেনা-বেচা। সর্বনাশা মাদকের ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে এখন কার অবিভাকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন।