সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: সর্বত্র মাদকের ছড়াছড়ি! অবাধে চলছে কেনাকেচা। আশাশুনি উপজেলার ১১ ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক কারবারি। এসব অপকর্মে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের পাশাপাশি জড়িত রয়েছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এ মাদক নিয়ন্ত্রণে যাদের দেখার কথা তারাও আবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে পুলিশের সোর্স যারা মাদক উদ্ধার ও মাদক পাচারকারীদের বা ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিতে সহায়তা করে সেই পুলিশের সোর্সরাই এখন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশকে ব্যবহার করে পুলিশের সোসরাই মাদক ব্যবসার সিন্ডেকেট গড়ে তুলেছে। এরা পুলিশের পরোক্ষ সহযোগিতায় মাদক বিক্রয়ও করে থাকে। এসব সোর্সরা মাদক ব্যবসায়ীদের না ধরিয়ে নিরহ ব্যক্তিদের মাদকের মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। জানা গেছে আশাশুনির বুধহাটার বটতলার মোড়, বুধহাটার-পাইথলীর মোড়, শ্বেতপুর আমতলার মোড়, শ্বেতপুর, বাহাদুর পুর খেয়াঘাট এখন বসছে মাদকের হাট। হাত বাড়ালেই মিলবে সব রকম মাদক। অথচ বুধহাটায় একটি পুলিশ ফাড়ি থাকলেও তার রয়েছে নিরব ভ’মিকায়। মাঝে মধ্যে দুএকজনকে গ্রেফতার করলেও প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের না ধরে সম্ভ্রান্ত ঘরের সন্তান, ছাত্রদের হাতকড়া লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। সন্ধ্যার পর বা রাতে এদের তৎপরতা বাড়ে। নিরাপদে মাদক ক্রয়ের জন্য মাদকসেবীরা ভিড় করে কথিত সোর্সদের কাছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। সম্প্রতি বুধহাটায় এক মাদক বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম বলেন, পূর্বে আমাদের প্রধান সমস্যা ছিল জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বেকারত্ব। কিন্তু আজকে প্রধান সমস্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বলা হবে- মাদক। মাদকাসক্ততা কেবল ব্যক্তি নয়, বরং গোষ্ঠিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাদকাসক্ততা রোধে পরিবার সমাজ এখন হিমশিম খাচ্ছে। প্রাচ্যের ঐতিহ্য পারিবারিক বন্ধন এখন ভেঙ্গে পড়েছে, তাই পরিবার দুর্বল হওয়ায় মানকাসক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি উপস্থিত সকলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মাদকের সাথে কোন ছাড় নেই। কোন পুলিশ যদি এর সাথে জড়িত থাকে তাহলে আমাদেরকে জানাবেন, সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ হোক, প্রভাবশালী হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। সুধীজনদের দাবী এলাকায় প্রকৃত মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী সাড়াশি অভিযান চালনো হোক। তবে নিরীহ কোন ব্যক্তি বা ছাত্রদের উপর মাদক সেবনের দায় নেমে না আসে সেটাও খেয়াল রাখার অভিমত প্রকাশ করেছেন।