লিটন ঘোষ বাপি:
আগামী কাল থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তারই আগমনী সুর যেন এখনই ভাসছে সোনা রোদের ঝিলিকে ও নীল আকাশে। প্রকৃতির মতোই পূজা মন্ডবে শুরু হয়ে গিয়েছে মায়ের আগমনীর আবাহন।
আর এই দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে মÐপে মÐপে বেড়েছে প্রতিমা তৈরির শেষ মূহুর্তের ব্যস্ততা।
প্রতিমা শিল্পীর রং-তুলির আঁচড়ে যেন প্রাণ সঞ্চারিত হচ্ছে দেবী দুর্গার। শেষ মূহুর্তে এসে প্রতিমা কারিগরদের যেন দম ফেলার সময় নেই। এবছর সাতক্ষীরা জেলায় ৫৬৪ টি মÐপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকল আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের তদারকির পাশাপাশি প্রতি মÐপে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রতিমা রং তুলির কাজ চলছে। দিনরাতের বেশি সময় প্রতিমা শিল্পীরা কাজ করছেন।
খড় আর কাঁচামাটি ও রংয়ের কাজ শেষে এখন নানা সাজ-সজ্জায় দেবী দুর্গা, সরস্বতী, ল²ী, কার্ত্তিক ও গণেশসহ সংশ্লিষ্ট সকল দেবতাদের বর্ণিল করে তোলার কাজ চলছে। প্রতিমা শিল্পীর রং-তুলির আঁচড়ে নানা বর্ণে সাজছেন দেবী দুর্গা।
মা দুর্গার আগমনে অশুভ শক্তির বিনাশ আর জগতের শান্তি প্রতিষ্ঠিতা হবে এই বিশ্বাস নিয়ে এই বছর সাতক্ষীরা সদরে ১০৭ টি, কলারোয়ায় ৪২টি, তালায় ৯৬ টি, পাটকেলঘাটায় ৭৪টি, আশাশুনিতে ১০৫ টি, দেবহাটায় ২১টি, কালিগঞ্জে ৫২টি, শ্যামনগরে ৬৭ টি মÐপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মহামারী করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে এবছর প্রতিটি মন্ডবে প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা এবং জ্বর মাপার জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রা পরিহারসহ সকল মÐপে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সামগ্রী রাখার জন্যও বলা হয়।
দুর্গাপূজার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হিন্দুদের কিন্তু মূলবাণী সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে নিবেদিত। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির হাজার বছরের অসা¤প্রদায়িক চেতনা। অর্থাৎ সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে সর্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা। সব মানুষের সুখ-শান্তি কামনায় এবং সর্বজীবের মঙ্গলার্থে হিন্দু স¤প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে প্রতিবছর উদযাপন করে থাকে শারদীয় দুর্গোৎসব।
বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে এই আনন্দধারায় এবার কিছুটা হলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে সরকার কিছু স্বাস্থ্যবিধি পালন করার নির্দেশনা দিয়েছে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপূজা উদযাপন করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।