
আশাশুনি প্রতিনিধি : মরিচ্চাপ নদী মাঝ বরাবর খননের দাবিতে জেলা প্রসাশক বরাবর গনস্বাক্ষর করে আবেদন করেছে শোভনালী এলাকাবাসি। সোমবার বৃহত্তর জনস্বার্থে সুদুর প্রসারি চিন্তা চেতনায় মরিচ্চাপ নদী দুই মৌজার ডি এস মাঝ বরাবর খননের জন্য, আশাশুনি উপজেলার আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকিম ভাইস চেয়ারম্যান অসিম বরন চক্রবর্তী উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারন সম্পাদক সম্ভুজিত মন্ডল শোভনালী ইউনিয়নের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোনায়েম সানা সহ সকল ইউপি সদস্যর সুপারিশ কৃত সহ এলাকার জনসাধারনের গনস্বাক্ষরিত আবেদন পত্র প্রদান করা হল সাতক্ষীরা জেলা প্রসাশক এস এম মোস্তফা কামালকে, আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান এবি এম মোস্তাকিম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা সহ পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ এবং ২ এর নির্বাহি প্রকৌশলীকে। । আবেদনে উল্লেখ ছিল ২ মৌজার মাঝ বরাবর দিয়ে ডি এস ম্যাপ অনুযায়ি জনস্বার্থে দ্রত মরিচ্চাপ নদী খনন করতে হবে,সাথে সাথে সংযোগ দিতে হবে ইছামতি নদির সাথে।এবং দির্ঘ মেয়াদির জন্য ডাড়ার খাল,টিকেট,পুটিমারির খাল,শালখালির খাল,উজিরপুরের খালের উপর নির্মিত স্লুইচ গেট উঠিয়ে দিয়ে সরসরি সংযোগ করতে হবে মরিচ্চাপ নদীর সাথে। তাহলে মরিচ্চাপ নদী হবে দির্ঘ মেয়াদি। এবং নদির পুর্নতা ফিরে পাবে। সোমবার বিকালে গনস্বাক্ষরিতদের ৩০০ জন ব্যাক্তির মধ্যে আলাহজ্জ মো: আরশাদ আলী, শষ্টি সরকার, মফিজুল, মহিদুল, সামসের ,স্হানিয় সাংবাদিকদের জানান পুরাতন নকসা মোতাবেক মরিচ্চাপ নদী দ্রত খনন করা হোক,অনেকে সুযোগ বুঝে সৎ ব্যাবহার করবে,পুরাতন নকসার বাহিরে নদী খননের কাজ করানোর জন্য,কিন্ত নিজেদের স্বাূর্থ না দেখে বৃহৎ স্বার্থে পুরাতন নকসা মোতাবেক মরিচ্চাপ নদী খনন করলে করোর কোন সমস্যা হবেনা। এক সময়ের মরিচ্চাপ নদী এখন সরু নালায় পরিণত হয়েছে। মরিচ্চাপ নদী দখল মুক্ত না করলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে নদী সংলগ্ন এলাকা। স্থানভেদে ২৫০-৩০০ মিটার চওড়া নদীটি এখন সরু নালা। নদীর দুই পাশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে কাঁচা-পাকা বাড়ি, ঘের, ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। নদীটির সিংহ ভাগই এখন দখলদারদের কবলে। এতে নাব্যতা হারিয়ে নদীটি এখন মৃত। আর তার নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে নদীর তিরবর্তী গ্রামগুলোতে জলাবদ্ধতাসহ পরিবেশগত নানা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে, দখলদারদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অনেকেই এক সময়কার প্রমত্তা মরিচ্চাপ নদীর নাম বদলে নালা বলতে শুরু করেছেন।সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আ: ছামাদ থাকাকালিন মরিচ্চাপ নদী খনন করা হয়েছিল,কিন্ত বর্তমানে পুনরাই নদী ভরাট করছে অবৈধ দখল কারিরা, যার কারনে নদী এখন আর নদী নাই, এখনই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নিলে ক’দিন পর যেটুকু আছে তাও অবশিষ্ট থাকবে না বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর, প্রবাহহীন সামান্য পানি নিয়ে মরিচ্চাপ নদীর সাক্ষ্য দিচ্ছে নালাটি। দেবহাটা থেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মধ্য দিয়ে আশাশুনি উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ মরিচ্চাপের পুরোটাই চলে গেছে দখলদারদেরকবলে শোভনালী ,কামালকাটি নইকাটি,বাকড়া,শরাপপুর,ব্যাংদহ ,
টিকেট,হিজলডাংগা,বিলশিমুলবাড়িয়া,শিমুলবাড়ীয়া, বালিথা, চরবালিথা, গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর দু’ধারে চলছে দখলের মহোৎসব। মূল নদীর দু’ধারে বেড়ির মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য পাকা-কাঁচা বাড়ি, ধর্মীয় স্থাপনা, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান, ইটেরভাটা, মুরগির খামার, ঘেরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীটি চলছে মেরে ফেলার উৎসব। নদী তীরবর্তী এলাকাবাসী জানান, এক সময় মরিচ্চাপ ছিলো খরস্রোতো। এতে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা হতো। মরিচ্চাপ ছিলো স্থানীয়দের জীবন-জীবিকার উৎস। এই নদী দিয়ে চলতো বড় বড় লঞ্চ-স্টিমার, পাল তোলা নৌকা। আর এই নদী দিয়ে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ কলকাতায় যেতো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে। আশাশুনি, দেবহাটা এবং সদরের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার অন্যতম প্রধান পথ ছিলো এই নদী। বিশেষ করে সাতক্ষীরা শহরে আসতে এই নদীই ছিল প্রাণসায়ের খালে প্রবেশের পথ। খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিলো এটি। নদীটির সাতক্ষীরা সদরের এল্লারচরে ছিলো স্টিমার ঘাট। ভাঙা-গড়ার দৃশ্য দেখা যেত নদীর দু’পাড়ে। দু’ধারে নদীকে কেন্দ্র করে বিস্তৃত ছিলো ফসলের মাঠ। নদীতে রাত-দিন মাছ ধরে সংসার চালাতো গরিব, অসহায়, লোকজন। এছাড়াও অনেক জায়গায় খেয়াঘাট ছিল। কিন্তু আজ সবই স্বৃতি। আজ সেই নদী একটি শিশু লাফ দিয়ে পার হচ্ছে,আর অপেক্ষা করতে হচ্ছে না কখন আসবে খেয়া নৌকা,কখন নদী পার হব,শুনতে হচ্ছেনা নৌকার মাঝি সহ পাটনিদের বড় কথা,এছাড়া নদীর বাকে বাকে অপরিকল্পিতভাবে স্লুইস গেট করায় খালগুলোর পানি প্রবেশ ও পানি বের হতে না পারায় জোয়ারে আসা পলি নদীর বুকে জমে যাওয়ায় নাব্যতা হারায় নদীটি। ফলে এখন আর জোয়ার-ভাটা হয় না। তার উপর আবার নেট-পাটা ও অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। নদীর অধিকাংশ জায়গা দখল হয়ে গেছে। ভূমি অফিসের কিছু কর্মকর্তার অবহেলা আর অর্থ বানিজ্যের কারণে এটা হয়েছে বলে অনেকের ধারনা। তবে এই মুহুর্তে নদী দখল মুক্ত করতে হবে,পুরাতন নকসা মোতাবেক মরিচ্চাপ নদী খনন করতে হবে, এমন দাবি শোভনালী, বুধহাটা ইউনিয়ন, ফিংড়ি ইউনিয়ন সহ সর্বস্তর জনগনের, অন্যথায় নদী সংলগ্ন এলাকা জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে,দেশের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে মরিচ্চাপ নদীর নাম, দ্রত মরিচ্চাপ নদীকে বাচাতে কার্যক্রম শুরু করা হোক এমন দাবি সচেতন মহলের।