
আব্রাহাম লিংকন, শ্যামনগর থেকে: মধুর খামার থেকে লাশ হয়ে শ্যামনগরে ফেরা রিয়াজের মৃত্যুর ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। মুখ খুলতে শুরু করেছে তার পরিবার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার শেখের কান্দি এলাকায় সুবজের ২৮৩ পিছ মৌমাছির বাক্স ছিলো। ঘ‚র্ণিঝড় সিত্রাংএর প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ৭০ পিছ বাক্সের মৌমাছি মারা যায়। আর এ ঘটনা কাল হয়ে দাঁড়ায় রিয়াজের জীবনে। সবুজ ও তার ম্যানেজার কালিগঞ্জ উপজেলার ভদ্রখালী গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সিরাজুল বেধড়ক পিটিয়ে মেরে ফেলে। বাঞ্ছারামপুর থানাকে অবগত না করেই পরে সবুজ, সিরাজুল ও মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের আইটপাড়া এলাকার মাহামুদুল্লাহর মাধ্যমে গত ২৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখ সকালে প্রাইভেট গাড়িতে রিয়াজের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। সেই সাথে আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রচার করে সিরাজুল ও মাহামুদুল্লাহ। রিয়াজের পরিবারকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রিয়াজের মরদেহ গোছলের সময় তার পিঠে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখে স্থানীয়দের গা শিউরে ওঠে। ৯৯৯ নাম্বারে দেওয়া হয় কল। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রিয়াজের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা প্রেরণ করেন।
রিয়াজের মা’য়ের নানি মায়া বিবি বলেন, বৃষ্টির কারনে ৭০ ডা বাক্সের মাছি মারা যায়। বাছাডার কেউ ঠেকাইনি। ওর তো ওখান কেউ ছিলো না। কেরা ঠেকাবে ? বাছাডার বাড়িয়ে মাইরে ফেললো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
রিয়াজের চাচাতো ভাই ইমরান বলেন, রিয়াজকে ঈদেও বাড়ীতে আসতে দেয়নি। আমার সাথে সব সময় কথা হতো। ওর উপর খুব অত্যাচার হতো। বুঝতে পারিনি তাকে হারাতে হবে।
রিয়াজের ফুফু হোসনেয়ারা খুকি বলেন, রিয়াজের স্বপ্ন ছিলো তার পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে সংসারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে। এই বয়সের ছেলে ঘুরে বেড়াই আর ও টাকার জন্য বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলো। খুবই ভালো ছিলো ছেলেটা।
রিয়াজের মা’ নাজমা বেগম কান্নায় জড়িত কন্ঠে বলেন, এখন শুনছি সবুজ ভালো না। আগেও এমন ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। বাছাডার না পাঠালে আজ এই দিন দেখতে হতো না।
২৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখ বিকাল ৫ টায় সাতক্ষীরা থেকে ময়নাতদন্ত শেষে রিয়াজের মরদেহ তার নিজস্ব বাসভবনে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।