গার্ডের নেওয়া টাকার ভাগ পায় উপরওয়ালা থেকে প্রভাবশালী;
ড্রাইভারদের পক্ষ নেওয়ায় ব্যবসায়ীকে হেনস্তা;
আহাদুর রহমান জনি: ভোমরা স্থলবন্দর ট্রাক ইয়ার্ডে ড্রাইভারদের কাছ থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমান টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বাংলাদেশী লোড গাড়ি ও ভারতীয় লোড/আনলোড উভয় শ্রেণীর গাড়ি থেকে টাকা তোলে ট্রাক ইয়ার্ডের নিরাপত্তার দাীয়ত্বে থাকা আবুল কালাম, সাব্বির ও গার্ডরা।
ভিডিও লিংক: https://fb.watch/fJEFKdVFyU/
সাতক্ষীরার আর্ন্তজাতিক প্রবেশদ্বার ভোমরা স্থল বন্দর। প্রতিদিন এখানে পন্য খালাস করতে ভারতীয় ও বাংলাদেশী ট্রাক প্রবেশ করে। মালামালগুলো এক ট্রাক থেকে অন্য ট্রাকে আনলোড করতে সরকারি ট্রাক ইয়ার্ডে প্রবেশ করতে হয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বন্দর ট্রাক ইয়ার্ডের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরপত্তরক্ষীরা বে-শুমার চাঁদাবাজিতে মেতেছে। প্রথম প্রথম ২০ টাকা করে ট্রাক প্রতি আদায় করা হলেও এখন তা গিয়ে ঠেকেছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা। ভারতীয় ট্রাকের ক্ষেত্রে লোড/আনলোড করে বের হওয়ার সময় দিতে হয় ১০০ টাকা। আর বাংলাদেশি ট্রাক লোড নিয়ে বের হওয়ার সময় দিতে হয় ৬০টাকা চাঁদা। ফলে ব্যবসায়ীদের লোকসানের সাথে সাথে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে লাঞ্ছিত করা হয় ব্যবসায়ীদের। প্রতি মাসে সবমিলিয়ে প্রায় ৭ লাখ টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করে আবুল কালাম, সাব্বির ও তার দলবল। এদিকে আদায় করা এ বিপুল পরিমান চাঁদার টাকায় আলিপুর চেকপোস্ট সংলগ্ন অর্ধ কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি বানিয়েছে আবুল কালাম।
গত বৃহস্পতিবার (২২’সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার সময় ভারতীয় ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করতে না পেরে ট্রাক ইয়ার্ডের ৩নং গেটে গোলযোগ সৃষ্ঠি করে নিরাপত্তা রক্ষীদের দায়িত্বে থাকা আবুল কালাম, সাব্বির ও তাদের সাথে থাকা গার্ডরা। একই সময় ওখান দিয়ে যাওয়া ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান মন্টু যানজটে পড়েন। ঘটনা পর্যবেক্ষণে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে দেখে আবুল কালামের নেতৃত্বে নিরাপত্তা রক্ষীরা ভারতীয় ড্রাইভারের সাথে চাঁদা আদায় নিয়ে দহরম-মহরম করছে। তিনি এ সময় জানতে চাইলে তাকে লাঞ্ছিত করে আবুল কালাম ও তার দলবল। এসময় ভারতীয় ড্রাইভাররা মন্টুকে কালামের কবল থেকে উদ্ধার করে। মন্টু এ সময় চাঁদা আদায়েরর কারণ জানতে চাইলে আবুল কালাম জানায় আমরা কিভাবে কার কাছ থেকে টাকা নিব সেটা আমাদের ব্যাপার। এডিসহ সবাইকে এই টাকার ভাগ দিতে হয়। এ সময় সাব্বির ব্যবসায়ীর উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে বলে এখানে যে বুঝতে আসবে তাকে যাদুকে দিয়ে তুলে দেব। আমরা কারও পরোয়া করিনা।
কাস্টমস্ ভ্যাট ও এক্সারসাই বিভাগের ডিসি নেয়ামুল হাসান সাতনদীকে জানান, সাব্বির পোর্টে কোন দায়িত্বে নেই। কিন্তু আমাদের কর্মকর্তাদের সহায়তা করে। তার বিরুদ্ধে টাকা আদায়ের অভিযোগ কেউ প্রমানসহ দিতে পারলে অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোমরা স্থল বন্দরের ডিডি মামুন জমাদ্দার সাতনদীকে জানান, আমি এ বিষয়ে শুনেছি। তবে কাল বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এএসএম মাকছুদ খান সাতনদীকে জানান, কোন ব্যবসায়ীকে হয়রানি করে পোর্টে চাঁদাবাজি করতে দেয়া হবেনা। আমরা এ বিষয়ে করনীয় ঠিক করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।