
শেখ বাদশা, আশাশুনি থেকে: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আম্ফানের তান্ডবে নদীর বেড়ীবাঁধ বিলিন হওয়ায় ভিটাবাড়ী বিলিন হয়েছে শত শত পরিবারের। ঘূর্ণীঝড় আম্ফানের পর থেকে এলাকার শত শত মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে উচু জায়গায় গাছের উপর টং বেঁধে বসবাস করে আসছে। কেউ ছেড়েছেন এলাকা কেউবা পরিবার নিয়ে উঠেছেন নৌকায়। আর সেই নৌকায় মায়ের কোল উজ্জল করে জন্ম নিয়েছে এক ফুটঠুটে পুত্র সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বন্যতলা এলাকায়।
সরেজমিন ঘূরে ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, প্রতাপনগর ইউনিয়নের বন্যতলা এলাকার মৎস্যজীবি ইয়াকুব হোসেনের ভিটাবাড়ী আম্ফানের তান্ডবে নদীর বেড়ীবাঁধ বিলিন হয়ে যায়। সেখান থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে নিজের মাছ ধরা নৌকায় বসবাস করেন তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ তার স্ত্রী মিনারা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হয়। নৌকা নদীর তীরে থাকায় স্থানীয় মহিলাদের সহযোগীতায় নৌকাতেই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মা মিনারা বেগম। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ এক নজর শিশুটিকে দেখতে বন্যতলা এলাকায় ভিড় জমায়। ইয়াকুব ও মিনিরা পরিবারে এর আগে দুইটি সন্তান আছে বলে সাতনদীকে জানান পরিবার প্রধান ইয়াকুব হোসেন। তিনি আরও বলেন, আমার একমাত্র আয়ের উৎস্য নৌকাতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করায় মাছ ধরাও বন্দ হয়ে আছে। আয়ের বিকল্প রাস্তা না থাকায় অন্য মানুষের সাথে মিলেমিশে মাছ ধরতে হয় তাকে। এতে করে পরিবারের মুখে কোন রকম দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের জোগান দিতে পারছি। ভিটাবাড়ী ও বসতঘর না থাকায় পরিবার এবং নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে নদীর জোয়ারের পানির উপর নৌকাতেই বসবাস করতে হচ্ছে তাদের। ভাসমান নৌকায় প্রতিদিন নদীর জোয়ারের পানির সাথে যুদ্ধ করতে হয় ইয়াকুব হোসেনের মত এলাকার হাজার হাজার বানভাসী মানুষের। প্রতাপনগরের ভাঙ্গন কবলিত স্থানে দ্রæত বেঁড়ীবাধ না দিলে এলাকা ছেড়ে অন্যকোন স্থানে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে জানান স্থানীয়রা। ইয়াকুব হোসেনের মত বানভাসী প্রতাপনগরের মানুষের সার্বিক সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবান মানুষের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।