
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান অছলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে মোটরসাইকেল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি ৩নং বৈকারী ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছি। আমার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী নৌকা প্রতিকের আসাদুজ্জামান অছলে (বর্তমান চেয়ারম্যান) গত ২৭ অক্টোবর নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর আমি এবং আমার লোকজনসহ কিছু মোটর সাইকেল যোগে আমার নিজ এলাকায় যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে ৩নং বৈকারী ইউনিয়ন কয়ারপাড়া নামক স্থানে পৌঁছালে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী আসাদুজ্জামান অছলে, তার ছেলে ইনজামুল হক ইনজা, জহির রহমান ওরফে হৃদয়ের নেতৃত্বে আতাউর রহমান, ওয়াদুদ, আসাবুর রহমান, সোহাগ, আলম, শহিদুল ইসলাম, আনছার আলী, কালু, পুটি মাস্টার, মিলন, রিপন, সেলিম, বাবু, দুখে, রফিকুল, রেজাউল, হাসানসহ অজ্ঞাতা নামা আরও অনেকেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার পথরোধ করে আমার লোকজনের উপর রড, বাঁশের লাঠি, দা, হকিষ্টিক সহ দেশীয় অস্ত্র অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমার ১০-১২ জন কর্মী সমর্থরা গুরুতর আহত হয়। এদের দুইজনের অবস্থা গুরুতর। এ সময় তারা ১০টি মটর সাইকেল ভাংচুর ও একটি মোটর সাইকেল ছিনতাই করে। অথচ তারা উল্টো আমারসহ আমার লোকজনের নামে মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি ও নির্বাচন বানচাল করার পায়তারা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ইং ৩১ অক্টোবর আসাদুজ্জামান অছলের নির্দেশে উক্ত ব্যক্তিরা বৈকারী বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, নিজস্ব কার্যালয় ভাংচুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর লুটপাট ও কর্মী আব্দুস সালেকের মুরগির দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে। তারা এখনও আমার ও আমার কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারে বাধা সৃষ্টি করছে। পোস্টার, ব্যানার ছিড়িয়া ফেলছে। গত ইং ০৫ নভেম্বর খলিলনগর মহিলা মাদ্রাসার মোড়ে পোস্টার টানানোর সময় আমার কর্মী আমিনুর রহমান, রায়হান ও ইসারাইলদেরকে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত ও হুমকি প্রদর্শন করে বলে পুনরায় যদি পোস্টার টানাতে দেখি তাহলে জীবনে শেষ করে ফেলবো। তিনি আরো বলেন, গত ০৫নভেম্বর দিবাগত রাত ১১ ঘটিকার সময় আসাদুজ্জমানের উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের টানানো পোস্টারগুলি ছিঁড়ে ফেলে এবং আমার কর্মী সিরাজুল ময়রাসহ অনেকের বাড়িতে যেয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে যে নৌকায় ভোট না দিলে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে না। তারা এভাবে প্রকাশ্যে জনসভায়ও হুমকি প্রদর্শন করছে। তিনি বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামার অছলে দলীয় ক্ষমতা ও চেয়ারম্যানী ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়া দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, স্বর্ণপাচার, নারী পাচার, অস্ত্র ব্যবসা, কালোবাজারী, হুন্ডি ব্যবসা করে ২০১৩ সাল হতে ২০১৮ সালের মধ্যে জিরো থেকে কোটি কোটি টাকার গাড়ী, বাড়ী, জমি জমা ও স্বর্ণালংকারের মালিক হয়ে দেমাগ অহংকারে এলাকার জনগণের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে। অছলে এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর দাপটে এলাকার সাধারণ মানুষ কোন কথা বলতে সাহস পায় না। তার কথা না শুনলে হামলা-মামলা দিয়ে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের হয়রানি করে। অছলের দুই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ পুত্র ইনাজামামুল (ইনজা) ও জহির রহমান (হৃদয়) তারা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা সর্বদা মানুষের উপর জুলুম, নির্যাতন ও মারধর করে থাকে। তাদের কারণে এলাকার মানুষ স্বস্তিতে বসবাস করতে পারে না। এছাড়া তার ভাইয়েরাও সর্বদা মানুষের উপর গালিগালাজ, মারধর, জমি জবর দখল, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ও চোরাকারবারী ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। তারা নিজেদের ইচ্ছামত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। চেয়ারম্যান অছলের উক্তি ‘আমি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আমি যেটা বলবো সেটাই হবে, যে ‘আমার বিরুদ্ধে যাবে আমি তার হাড়-গোড় ভেঙে ফেলব’। এমন ভাষায় সর্বদা আস্ফালন করে বেড়ায়। সকল রকম রীতি নীতি ও আইন এবং নির্বাচনী অধ্যাদেশ উপেক্ষা করে নৌকার প্রার্থী সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে, যাতে প্রতিপক্ষ চেমারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী কাজ করতে না পারে। নির্বাচনী মাঠের অবস্থা অসহনীয় এবং ভয়াবহ। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় সাতক্ষীরা জেলা রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের এবং তার ও তার কর্মী সমর্থকদের জীবনের নিরাপত্তার দাবী জানিয়েছেন।