কাজের গুনগত মান প্রশ্নবিদ্ধ, অভিযোগ খোদ সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির
আহাদুর রহমান জনি: সাতক্ষীরার বেতনা নদীতে তিনটি প্যাকেজে চলছে প্রথম পর্যায়ের ৫০ কোটি ৩৪ লাখ টাকায় সাড়ে ২৩ কিলোমিটার খনন কাজ। বেতনার আরও সাড়ে ২০ কিলোমিটার খনন ট্রেন্ডার প্রক্রিয়ায় আছে। তবে কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাতক্ষীরা সদর-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ের পওর বিভাগ-২ সূত্রে জানা যায়, বেতনা নদীর কলারোয়া বাজার থেকে আশাশুনি খোলপেটুয়া নদীর সংযোগ পর্যন্ত মোট ৪৪ কিলোমিটার নদী খননের আওতা ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে তিনটি প্যাকেজে সাড়ে ২৩ কিলোমিটার নদী খননের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু হয়। যা বর্তমানে শেষ পর্যায়ে আছে। প্যাকেজ ১ এ কলারোয়া বাজার থেকে ঝাউডাঙ্গা বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার, প্যাকেট ২ এ ঝাউডাঙ্গা থেকে সাতক্ষীরা সদরের রাজনগর পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার ও প্যাকেজ ৩ এ রাজনগর থেকে শাল্যে পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার নদী খনন চলছে। তবে কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাতক্ষীরা সদর-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এপ্রিলের ১৭ তারিখে বেতনা খনন পরিদর্শনে গিয়ে মীর মোস্তাক আহমেদ রবি সয়ং একটি লাইভে এ অভিযোগ করেন।
প্রথম প্যাকেজে বেতনা খনন হচ্ছে কলারোয়া বাজার থেকে ঝাউডাঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এই প্যাকেজে প্রায় ৭ লক্ষ কিউবিক মিটার নদীর পলি অপসারিত হবে। এ অংশে ভূ-পৃষ্ট থেকে -.৭৯০ মিটার গভীর আছে। যা খননের পর -২.৩৮ মিটার গভীরতায় শেষ হবে। এই ধারাবাহিকতা তৃতীয় প্যাকেজের শেষ পর্যন্ত -৩.০৩ মিটার পর্যন্ত গভীর হবে। এই প্যাকেজের কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে যৌথভাবে আছে ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ ও মিজানুর আলম।
দ্বিতীয় প্যাকেজে বেতনা খনন হচ্ছে ঝাউডাঙ্গা থেকে রাজনগর পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এই প্যাকেজে প্রায় ৯ লক্ষ ৭১হাজার কিউবিক মিটার নদীর পলি অপসারিত হবে। এই প্যাকেজেরও কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে যৌথভাবে আছে ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ ও মিজানুর আলম।
তৃতীয় প্যাকেজে বেতনা খনন হচ্ছে রাজনগর থেকে শাল্যে পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এই প্যাকেজে প্রায় ১৯ লক্ষ ২৩ হাজার কিউবিক মিটার নদীর পলি অপসারিত হবে। এই প্যাকেজের কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে যৌথভাবে আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এডিএল ও এজেডডিএল।
সাতক্ষীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ সাতনদীকে জানান, বেতনার ৪৪ কিলোমিটার এলাকা খননের আওতায় আসবে। বর্তমানে তিন প্যাকেজে বেতনার সাড়ে ২৩ কিলোমিটার খনন কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। আগামী জুনে এই প্যাকেজগুলোর কাজ শেষ হবে। বাকি সাড়ে ২০ কিলোমিটার খনন প্রকল্প ই-ভ্যালিশান জারি আছে। আশা করি খুব শীঘ্রই বাকি অংশের কাজ শুরু হবে।
৪৪ কিলোমিটারের এ প্রকল্পটি সম্পন্ন হল উপকৃত হবেন এলাকার হাজার হাজার কৃষক, বাড়বে মৎস্য আহরণ। নদীতে বাড়বে পানি ধারণ ক্ষমতা। শুকনো মৌসুমে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করতে পারবেন কৃষক আবার বর্ষা মৌসুমে বন্যা নিয়ন্ত্রন হবে। ফলে বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে ফসল এছাড়াও নদীতে বাড়বে মৎস্য আহরণ।