সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি থেকে: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গাপূজা আগামী বুধবার থেকে শুরু হবে। ফলে প্রতিটি পূজা মন্ডপে চলছে শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতি। এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মত এ বছরও আশাশুনিতে চলেছে নানা আয়োজন। পূজা মন্ডপে চলছে এখন প্যান্ডেল ও লাইটিং এর কাজ। সেই সাথে চলছে প্রতিমার সাজ সজ্জার কাজ। আশাশুনি উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ের ৯৫ টি পূজা মন্ডবে এ দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের মত এবছরও দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বাঙ্গালীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গাপূজা। দূর্গার আগমনে এ বছর আশাশুনি উপজেলায় চলছে ৯৫ টি মন্ডপে পুজার প্রস্তুতি। কোন মন্ডপে চলছে সাজানো গোছানোর কাজ, কোন মন্ডপে চলছে রং এর কাজ। সেই সাথে দেবী দূর্গার আগমন সন্নিকটে থাকায় আয়োজকরা করেছেন সাজ সজ্জার কাজ। আর কয়েকদিন পরে ঢাকের বাজনা, উলুধ্বনি ও আরতীতে মুখরিত হবে পাড়ামহল্লা ও গ্রাম ফলে খড় ও কাঁদামাটি দিয়ে পরম যতেœ গড়ে উঠা এসব প্রতিমা প্রাণ সঞ্চার পাবে।। দূর্গাপূজা উপলক্ষে আশাশুনি প্রতিমা শিল্পীদের দম ফেলার যেন ফুরসত নেই। দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রতিটি মন্ডপেই প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত শিল্পীরা। রং তুলির শেষ আচড় দিয়ে পরিপূর্নতায় রূপ দেবেন প্রতিমা শিল্পীরা। বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিমা শিল্পিরা চলে আসেন আশাশুনির এসব মন্ডপে। তবে কাজ চলবে পূজা শুরুর আগের দিন পর্যন্ত। তবে কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়ে যাবে। দেবী দুর্গা, তার সাথে বিদ্যার দেবী স্বরসতী, ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী এবং তার সাথে দেবতা কার্তিক, গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুঁটিয়ে তুলছেন নিপুন হাতের ছোঁয়ায়। শারদীয়া এ দূর্গাৎসব শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নয় অন্যান্য ধর্মবলম্বীদের মধ্যেও সৃষ্টি করবে দৃঢ় সম্প্রিতির বন্ধন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
উপজেলা প্রসাশন থেকে জানা গেছে এ বছর উপজেলায় ৯৫ টি মন্দিরে পূজা অনষ্ঠিত হবে। প্রতিমা শিল্পী কালোসোনা জানান, এ বছর এক-একজন ভাস্কর ৫ থেকে ৬টা প্রতিমা তৈরী করেছেন। পূজা শুরুর কয়েকদিন আগের শেষ হয়ে থাকে প্রতিমা তৈরী ও রং এর কাজ। তবে বিগত বছরের তুলনায় মুজরী অনেক কম। দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির এই বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরী করে যে মজুরি পান শিল্পীরা তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টের হয়ে পড়েছে তাদের। ফলে পুর্বপুরুষের এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই। বুধহাটা সূবর্ণ বনিক পাড়ার পূজা কমিটির সভাপতি সজল কুমার আঢ্য বলেন, প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে প্যান্ডেল ও লাইটিং এর কাজ। তবে এবছর প্রতিমা তৈরীর আনুসঙ্গিক জিনিস পত্রের দাম বাড়ার কারণে তাদের এবার খরচের পরিমান বেশি। স্বাস্থ্য বিধি মেনে আমরা পূজা করার চেষ্টা করবো। তিল তিল ভাবে প্রতিটি মন্দির মুখরিত করতে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আয়োজকরা। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আশাশুনি উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক জানান, রনজিৎ কুমার বৈদ্য বলেন, বিধি মেনে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ডপে যাতে নিরাপত্তা বজায় থাকে সে ব্যাপারে মন্দির কমিটির সাথে আলোচনা হয়েছে। দ্রব্য মূল্য উধগতির কারনে গ্রামাঞ্চলে পূজা মন্ডপ তৈরী করেত অনেক কষ্ট হচ্ছে আয়োজকদের। এছাড়া সরকারী সাহায্য-সহাযোগীতা প্রয়োজনের তুলানায় অনেক কম। তরপরেও কষ্টের মধ্যে থেকে দূর্গাপূজা যতটা আননন্দের মধ্যে করা যায় আয়োজককেরা সে চেষ্টা করেছেন। আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জানান, সার্বজনীন পূজা মন্ডপ গুলোতে পূর্বের মত নিরাপত্তা থাকবে। দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে আশাশুনি উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন রাখা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে পালন করতে পারে সেজন্য মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। এর পাশাপাশি যদি মনে করি নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে হবে সেটা আমরা করবো।