নিজস্ব প্রতিবেদক : বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে কলেজের নাম করণ ও এমপিও হওয়ার পরেই স্থানীয় জামায়াত বিএনপির ক্যাডাররা কলেজটি ধ্বংসের পায়তারা চালাচ্ছে। এজন্য তারা গড়ে তুলেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের প্রধান লক্ষ প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি যেন আবারো মুখ থুবড়ে পড়ে।
জামায়াত শিবিরের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী কাথন্ডা এলাকায় অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজটি ভালো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ায় ও কলেজটি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নাম করণ হওয়ায় বর্তমান প্রজন্ম ও সর্বসাধারনের কাছে গ্রহযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিণত হওয়ায় নজর পড়ে স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধীদের।
সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু’র হাতে গড়া দাঁতভাঙ্গা মহাবিদ্যালয় যা এম.পি.ও ভূক্ত হওয়া সত্বেও ১৯৭৮ সালে স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র তৎকালীন কলেজটিকে ধ্বংস করেছিল। কলেজটি ২০০৪ সালে পুনঃ স্থাপিত হয়। ২০১৯ সালে দাঁতভাঙ্গা মহাবিদ্যালয় এর নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম করণ করায় সেই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
এবার এই চক্রের নেতৃত্বে আছে উপজেলার বৈকারী এলাকার মৃত শহর আলী মোল্যার ছেলে মাঃ শাহাজান কবির লাভলু। এই লাভলুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধীরা একত্রিত হয়ে তার সহযোগীরা পুনরায় এম.পি.ও বন্ধ সহ মুক্তিযুদ্ধের নাম নিশানা মুছে ফেলার হীন ষঢ়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
আরো জানা গেছে, ২০১৮ সালে কলেজের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে প্রস্তাবটি জানার পর থেকে সে স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী নেতাদের সাথে একজোট হয়ে মুক্তিযোদ্ধা নামকরণ নিয়ে কলেজের সাথে তীব্র বিরোধীতা করে এরপর ০২/০৫/২০১৯ সালে যখন শিক্ষামন্ত্রানালয়ে নাম পরিবর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি হয় তখন সে দাম্ভীকতার সাথে বলতে থাকে মুক্তিযোদ্ধা নাম করণ করায় কলেজটি ৮০ বছরেও এম.পি.ও হবে না বলে প্রচার চালায় এবং বিভিন্ন সময়ে সে তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে (কাথন্ডা বাজার) বসে স্থানীয় অভিভাবকদের তাদের ছেলে মেয়েদের এই কলেজে ভর্তির জন্য নিরুৎসাহিত করে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি আদর্শ কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, মোঃ শাহাজান কবির লাভলু প্রায়ই সরকার পরিবর্তনের কথা বলে কলেজের শিক্ষক কর্মচারিদের এম.পি.ও বন্ধের হুমকি দেয়।
কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নে অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে দানপত্র মূলে প্রাপ্ত সম্পত্তি যাহা দানপত্র কারীদের উপস্বত্ব ভোগীরা জবর-দখল করে চাষাবাদ করার পায়তারা করে। মোঃ শাহাজান কবির লাভলু তাদের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে তাদেরকে উৎসাহ দিয়ে কলেজ বিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত হয়ে পড়ে। তার উস্কানিমূলক কথা বার্তার কারণে আমরা কলেজের ১৬ বিঘা (মৌজা- কাথন্ডা, খতিয়ান নং-১২৫১, দাগ নং-৪২৯৪,৪২৯৬,৪২৯৭,৪২৯৮) ফসলি জমি নিজেদের আয়ত্বে আনতে বাধার সম্মুখীন হই। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে যখন কলেজটি এম.পি.ও ভূক্ত হওয়ার পর থেকে সে পুনরায় কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নানা প্রকার কুৎসা রটনা করতে থাকে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজের প্রভাষক মো: রমজান আলী, লিয়াকত আলী, ওবাইদুল্লাহ, আরিজুল ইসলাম, জিলানী মাহমুদ, ফারুক হোসেন, আক্তারুজ্জামান, বখতিয়ার উদ্দিন, আলী হোসেন টুটুল, আব্দুর রহিম, বায়জিত বোস্তামী, টিপু সুলতান, আব্দুল হান্নান, নাছির উদ্দিন, আলাউদ্দিন, রবিউল ইসলাম, প্রকাশ চন্দ্র গাইন, রোখছানা পারভিন আব্দুল হালিম,নাজমা পারভীন,ফরিদা খাতুন, ডি ও জি ওবাইদুল্লাহ জানান, কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ও অধ্যক্ষ মো: জাহিরুল আলমের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে কলেজটি ভালো অবস্থানে আছে। বিপুল পরিমান ছাত্র-ছাত্রী এখানে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। ভালো রেজাল্ট করে দেশের বিভিন্ন নামী দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। কলেজটি যখন শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে তখনই স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি কলেজকে ধ্বংস করার পায়তারা করে চলেছে। শিক্ষকমন্ডলী প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বৈকারী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামন অছলে জানান, মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী খালেক মন্ডল এর বাহিনী ও স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজ টি ধ্বংস করার জন্য চক্রান্ত শুরু করেছে। মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী খালেক মন্ডল এর নিকট আত্বীয় শাহাজান কবির লাভলু ও তার নেতৃত্বে জামায়াতি বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধার নামের কলেজটি নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বর্তমান সময়ে জামায়াতিদের এহেন কর্মকান্ড আমাদেরকে অবাক করে। আমরা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কলেজ নিয়ে চক্রান্তকারিদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশ প্রশাসনের জোর দাবী জানাচ্ছি।
এদিকে গ্রামীন নান্দনিক পরিবেশে অবস্থিত কলেজটিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে কলেজটির পরিচালনা পর্ষদ এর সভাপতি মো:নজরুল ইসলাম মোল্যা ও কলেজের অধ্যক্ষ মো: জাহিরুল আলম প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।