পাইকগাছা প্রতিবেদক: তুমি জ্ঞানী, তুমি বিজ্ঞানী, তোমাতে ধন্য বাঙালি বিশ্ব বরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র (পিসি রায়) রায়ের ১৬২তম জন্মজয়ন্তীতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য (এমপি) বলেছেন, শোকাহৃত আগস্ট মাস। এমাসে আমরা বেদনা বিধুুঁর হই। সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, যে মাটি তাঁর কৃতী সন্তানকে সম্মান দিতে পারে সে মাটি পূণ্যভূমি। এ মাটিতে বিনোদবিহারী সাধু, দানবীর মেহেরমুসল্লী, কাজী ইমদাদুল হক, পীর জাফর আউলিয়ার সহ বহুগুণীদের জন্ম বলেই এ অঞ্চল এত সমৃদ্ধ, এত উন্নত। সুযোগ্য পিতার হাতে আচার্য পিসি রায় বেড়ে উঠেছিলেন বলেই তাঁর কর্মে, অর্জনে আজ সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত। সারা বিশ্ব উপকৃত। বাঙালীর গর্ব বিজ্ঞানী পিসি রায় এর সাধনা অসাম্প্রদায়িক, জ্ঞান ভিত্তিক ও সমবায় অর্থনৈতিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১ টার সময় কপেতাক্ষ নদের তীরে পাইকগাছার রাড়ুলীতে বিজ্ঞানীর জন্মভিটায় ১৬২তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর বহুদেশ ভ্রমনের কথা বলে তিনি বলেন, পিসি রায়ের বাবার প্রতিষ্ঠা ১৮৫০ সালে দেশের প্রথম প্রত্যন্ত অঞ্চল রাড়ুলীতে তার মা ভূবন মোহনী দেবীর নামে বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৯০৯ সালে একই স্থানে কপারেটিভ সমবায় স্থাপন ও পিতার নামে আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র কলেজিয়েট স্কুল প্রতিষ্ঠা দেখে নিজেকে গর্বিত মনে করেন । মন্ত্রী আরোও বলেন, পিসি রায়ের সমাজ দর্শন ও রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা ও শিল্প ভাবনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু’র মত তার যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ সাধ্যমত চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখন সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে উস্কে দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে। আলোচনা সভার পূর্বে মন্ত্রী, এমপিসহ অতিথিবৃন্দ বঙ্গবন্ধু ও বিজ্ঞানীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে বিজ্ঞানীর বসত বাড়ি পরিদর্শন করেন। খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন এর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য দেন খুলনা-৬’র সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, প্রত্মত্বত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন, সফরসঙ্গী এপিএস মো. কবির খান, পিডি তপন কুমার, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জি. প্রেম কুমার মন্ডল, পিসি রায় স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ শাহদৎ হোসেন বাচ্চু, রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ। জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র ঘোষ, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা শংকর দেবনাথ প্রমুখ। সহকারী অধ্যাপক ময়নুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দীন ফিরোজ বুলু’র সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) মো. সাইফুল ইসলাম, ওসি রফিকুল রফিকুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) তুষার কান্তি দাশ, অধ্যক্ষ মিহির বরন মন্ডল ও মে. রবিউল ইসলাম, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরণ সাধু, উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান খান, কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, সমাজ সেবা কর্মকর্তা সরদার আলী আহসান, মৃদুল কান্তি দাশ, জয়ন্ত কুমার ঘোষ, মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, ইউপি চেয়ারম্যান কওসার জোয়াদ্দার ও আব্দুস ছালাম কেরু, বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ সরকারসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা বিজ্ঞানীর নামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বসতবাড়ীকে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা, বিজ্ঞানীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, পাঠ্যপুস্তকে বিজ্ঞানীর জীবনী সম্পর্কিত অধ্যায় অন্তর্ভূক্ত, জাদুঘর ও সংগ্রহশালা স্থাপনসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিবৃন্দ বিজ্ঞানীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান। পবিত্র কোরআন তেলোয়াত ও গীতাপাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানমালার শুরু হয়।আলোচনা সভা শেষে বিজ্ঞান বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা ও রচনা প্রতিযোগীতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। বাস্তবায়ন করেন, উপজেলা প্রশাসন ও রাড়ুলী ইউনিয়ন পরিষদ।
বিজ্ঞানী পিসি রায়ের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী পালন
পূর্ববর্তী পোস্ট