
জাতীয় ডেস্ক:
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বেইজিং কখনো নাক গলায় না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, আমি মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছি, অন্য দেশগুলোর মতো আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীন কখনো নাগ গলায়নি। আমরা বাংলাদেশের আরও উন্নয়ন চাই। আমরা বাংলাদেশের মানুষের জীবন মানের উন্নতি চাই।
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে আমরা সন্তুষ্ট। পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পে অবদানের জন্য তিনি (তথ্যমন্ত্রী) চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। আমি মন্ত্রীকে বলেছি, এখনো অনেক প্রকল্প আছে, যা চলতি বছরে শেষ হবে এবং এ বছরেই শুরু হবে।’
চীনের এই কূটনীতিক বলেন, ‘চীন সবসময়ই বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কৌশলগত অংশীদার। অতীতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখতে পেরে চীন গর্বিত। স্মার্ট বাংলাদেশ ও ভিশন ২০৪১ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০৪১ নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের এই প্রক্রিয়ায় চীন অবদান রাখতে চায় এবং অংশীদার হতে চায়। বাংলাদেশের এই লক্ষ্য অর্জনে চীন-বেইজিং একসঙ্গে আরও কাজ করতে পারে।’
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না; জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাহ, এ নিয়ে আমরা কোনো আলোচনা করিনি। আমাদের আলোচনার বিষয় ছিল অর্থনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতা। এটিই ছিল আমার দায়িত্ব। রাজনীতি নিয়ে আমরা কোনো কথা বলিনি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চীন এখন যেমন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে, তারা ভবিষ্যতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে থাকতে চায়। তারা কখনো বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামায়নি, ভবিষ্যতেও ঘামাতে চায় না।’
“চীনের রাষ্ট্রদূত সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য এসেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের উন্নয়ন ভাবনা এবং আমাদের ‘ডিভালপমেন্ট প্রসেসে’ চীন সরকারের যে ভূমিকা সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন যে, দেশের অনেক বড় বড় প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু টানেল, বিভিন্ন ব্রিজ এবং মেগা প্রকল্পের সাথে চীন কাজ করেছে এবং করছে” যোগ করেন মন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, চট্টগ্রামে এখন বহিঃসমুদ্র থেকে যাতে সরাসরি পতেঙ্গার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আমাদের তেল আসতে পারে, সেজন্য তারা পাইপলাইন নির্মাণ করছে এবং একটি ইপিজেডের কাজ চলছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী আরও জানান, “এছাড়া আমাদের ‘সিক্স টিভি’ একটা প্রজেক্ট আছে, যার মাধ্যমে বিভাগীয় শহরগুলোতে টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আমরা একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, সেটি চীন সরকারের অর্থায়নে হওয়ার কথা ‘কনসেশনাল লোনে’, সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যেহেতু পৃথিবীতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, সে কারণে আমরা এ বিষয়ে আপাতত ধীরগতিতে এগুচ্ছি।”