
হাবিবুর রহমান,শ্যামনগর থেকে: শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান সহ চার সহকারী শিক্ষা অফিসার বেশুমার অনিয়ম-দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন স্কুলের স্লীপ খাতে এবং রক্ষনাবেক্ষন খাতে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দের টাকা পেতে স্কুল গুলোকে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে।
২০১৯-২০ অর্থ বছরে শিক্ষা অধিদপ্তর হতে ১৯১ টি বিদ্যালয়ে স্লীপ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ কোটি ৫ হাজার টাকা এবং ১৩১টি রুটিন মেইনটেন্যান্স খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের উল্লেখিত খাত গুলোর কাজ শুরুর আগেই বরাদ্দের টাকা পেতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান ও সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহআলম,মোঃ আজহারুল ইসলাম, মোঃ সোহাগ হোসেন ও মোঃ সোহাগ আলমকে ১৫ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ প্রদান করতে বাধ্য হয়েছেন কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
১৭১ নং টেংরাখালি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, ৪২ নং নওয়াবেকী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন নাহার সহ বেশ কয়েকজন জানান, রুটিন মেইনটেন্স খাতে বরাদ্দের টাকা দেওয়ার সময় সহকারী শিক্ষা অফিসারগন ঘুষ হিসাবে ১০% ও ১২% ভ্যাট বাবদ কেটে নিয়ে চেক প্রদান করেছেন। সেই সঙ্গে তারা ¯øীপ খাতে বরাদ্দের টাকা দেওয়ার সময় ১৯১ টি স্কুলের প্রতিটি থেকে ঘুষ বাবদ ২ হাজার টাকা ও সাড়ে ৯% হারে ভ্যাট নিয়ে চেক প্রদান করেন। অথচ উপজেলা হিসাবরক্ষন অফিসের তথ্য মতে বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত খাতে র্নিমান সংস্থার কর্তনকৃত ভ্যাটের হার ৬%। কিন্তু নিয়ম বহিভূত ভাবে কোন আইনের কোন রকম তোয়াক্কা না করে রুটিন মেইনটেন্যান্স খাতে ভ্যাট হিসাবে অতিরিক্ত ৬% আর স্লীপ খাতে ভ্যাট হিসাবে অতিরিক্ত সাড়ে ৩% হারে কেটে নিয়েছেন ওই পাঁচ শিক্ষা কর্মকর্তা। অর্থাৎ উল্লিখিত দুইটি খাতে তারা দূর্নীতি ও আশ্রয় নিয়ে ১৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহ-আলম,আজহারুল ইসলাম, সোহাগ হোসেন ও সোহাগ আলমকে প্রশ্ন করা হলে তারা রুটিন মেইনটেন্স খাতে ১২% ও স্লীপ খাতে সাড়ে ৯% ভ্যাট নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন, কিন্তু রুটিন খাতে ১০% হারে নগদ টাকা ও ¯øীপ খাতে স্কুল প্রতি ২ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এদিকে বিভিন্ন পত্রিকায় দূর্নীতির খবরটি প্রকাশিত হওয়ায় তারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামান বলেন. আমার সহকারী শিক্ষা অফিসাররা শিক্ষক সমিতির কিছু শিক্ষকদের সঙ্গে যোগসাজশে প্রধান শিক্ষকদের নিকট থেকে কিছু টাকা তুলেছে বলে শুনেছি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, আইনের উর্দ্ধে কেউ নন। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসাররা আইন বর্র্হিভূত কাজ করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষ অফিসে দূর্নীতির বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও রোকেয়া মুনছুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ জাফরুল আলম বাবু ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ সভাপতি এ্যাড. আজিবর রহমান একই শুরে বলেন, এই সিরিয়াল দূর্নীতির মূলে রাঘব বলরা জড়িত। যার কারণে দূর্নীতিবাজরা বেপরোয়া। স্থাœীয় এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানই পারেন এ দূর্নীতি রুখতে। কোন পদক্ষেপ না নিলে এ দুজনকে জনগনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তারা এও জেলা শিক্ষা অফিসার এ দূর্নীতির দায় এড়াতে পারেন না। তার ভূমিকা প্রশ্ন বিদ্ধ।
ছবি ঃ