সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে চেউটিয়া নদীতে আড়াআড়ি ভাবে মাটির বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় পয়: নিস্কাশন ব্যাবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। অবৈধ দখল মুক্ত ও পয়: নিস্কাশন ব্যবস্থা সচল রাখতে বাঁধ ও নেটপাটা অপসারন কাজ শুরু করা হয়েছে। বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রনি আলম নূর সরেজমিন উপস্থিত থেকে অপসারন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। চেউটিয়া নদী/ খাল বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের বিশাল এলাকার পানি নিস্কাশন কাজে দীর্ঘকাল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই খালের মাধ্যমে সারা বছর পানি নিস্কাশনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, প্রয়োজনীয় পানি ব্যবহার করে ধান ও অন্য ফসল উৎপাদন করে এলাকার মানুষ জীবন নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু গত কয়েক বছর পূর্ব থেকে এলাকার প্রভাবশালী ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিবর্গ নদী/ খালের ৩ শতাধিক বিঘা জমি নিজেদের দখলে নিয়ে কিম্বা উচ্চ মূল্যে চুক্তি ভিত্তিক বিক্রয় করে খাল কুক্ষিগত করে রেখেছেন। জবর দখলকারীরা নদীতে অনুমান ৫০/৬০ স্থানে আড়াআাড়ি মাটির বাঁধ দিয়ে ও নেটপাটা দিয়ে আটকে নদীতে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বড়দল ইউনিয়নের গাতিরমহল, পাঁচপোতা, লক্ষ্মীখোলাসহ আশপাশের গ্রামগুলোর পানি অপসারণ বন্ধ থাকায় এলাকার কৃষকরা যেমনি ধান চাষ করতে পারছেনা, তেমনি মানুষ ঘরবাড়ি রক্ষা স্বাভাবিক জীবন যাপনে চরম ভাবে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ চন্দ্র সানা নির্বাচনের সময় ওয়াদা দিয়েছিলেন, অবৈধ খাল দখলমুক্ত করে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিন চাহিদা পুরন করবেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর এলাকায় সরেজমিন গমন করে নদীতে আড়াআড়ি মাটির বাঁধ দেখে অবাক হয়ে যান। তিনি স্থানীয় মানুষ ও বাধ দিয়ে মাছচাষকারী ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা জানতে পারেন। বড়দল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার খাল/ নদীর চিত্র ও অবৈধ দখলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। এরপর একে একে বেশ কিছু অবৈধ মাটির বাঁধ অপসারনের নির্দেশ প্রদান করলে মানুষ কোদাল দিয়ে মাটি কেটে পয়: নিস্কাশন ব্যবস্থা চালু করেন। আগামী দু’দিনের মধ্যে সকল বাঁধ ও নেটপাটা অপসারণ করতে তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম এনামুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান জড়দীশ চন্দ্র সানা, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার, থানার এসআই নূর নবী, কৃষি অফিস ও ইউএনও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। অবৈধ বাঁধ কেটে নদী/ খাল অবমুক্ত করায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।