সোমবার বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চের পাদদেশে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের মরদেহ । সেখানে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মন্ত্রী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রী ও লেখকসহ তার ভক্ত, পাঠক-অনুরাগীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ছোটকাকু ক্লাব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, টেলিভিশন, নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
রাবেয়া খাতুন রোববার বিকেলে ৮৫ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল কয়েক দফায় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।
বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন রাবেয়া খাতুন। অর্ধশতাধিক উপন্যাস ও চার শতাধিক গল্প লিখেছেন তিনি। এমন একজন লেখিকার চলে যাওয়া বাংলা সাহিত্যের অপ‚রণীয় ক্ষতি। তার চেয়ে বড় কথা, তিনি যেই সময়ে সাহিত্য রচনা শুরু করেছিলেন, সেই সময়ে নারীদের ক্ষেত্রে সেটা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু তিনি তার কাজে সফল হয়েছেন।
বাংলা সাহিত্যে রাবেয়া খাতুনের মতো লেখিকা আর পাওয়া যাবে না। একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন শুধু বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেননি; তার লেখনির মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতিকে সমাজে দারুণভাবে তুলে ধরছেন । তিনি তার লেখনীর মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনবোধকে তুলে ধরতেন। আমরা বিশ্বাস করি তিনি তার লেখার মাধ্যমে আমাদের মাঝে সারাজীবন বেঁচে থাকবেন। মুক্তিযুদ্ধ ও নারীদের নিয়ে তিনি প্রতিনিয়ত কাজ করেছেন।
যাদের লেখায় আজকের সাংস্কৃতাঙ্গণ অনুপ্রাণিত হয় রাবেয়া খাতুন তাদেরই একজন। অর্ধ শতাধিক উপন্যাসের রচয়িতা রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা করেছেন, সাংবাদিকতাও করেছেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৩ সালে একুশে পদক এবং ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পদকে ভ‚ষিত হন।
কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন লেখার মধ্য দিয়ে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। আমরা মহীয়সী এ নারীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।