প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১০:৫৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ৯:৩০ অপরাহ্ণ
প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষকের ভূমিকা
সব শিক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা।প্রত্যেক শিশু জন্মগ্রহন করার পর তার প্রথম শিক্ষক হিসেবে পায় তার জননী কে,এখান থেকেই শুরু হয় তার জীবন যুদ্ধের অবতারণা। একটু একটু করে শিশু তার চারপাশের পরিবেশকে চিনতে শেখে তার জন্মদাত্রী মায়ের সহায়তায়। পারিবারের এই গন্ডি থেকে সে জীবনে প্রথম বাইরের পৃথিবীতে পা রাখে, শিশুর পরিচিত পরিবেশের বাইরের এই জায়গাটিই হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে শিক্ষকগন এই শিশুকে নিজের সন্তান হিসেবে অতি উৎসাহে ও আন্তরিকতায় বরন করে নেয়। একজন মা- ই তার সন্তানের সঠিক পরিচর্যা করতে পারে,, আর এই মা যখন শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ানোর এবং মানসিক বিকাশের সব দায়িত্ব নেয় তখন শিশুর পরিবার থাকে নিশ্চিন্তে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ প্রাথমিক শিক্ষায় ৬০% নারী শিক্ষকের অন্তর্ভুক্তিকরন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উপলব্ধি করেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিলো যা প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাবস্থা কে ঢেলে সাজাতে সুদুরপ্রসারি প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। নারী শিক্ষক একদিকে যেমন আদর সোহাগ করে একইভাবে অত্যন্ত আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষাদানও করে থাকেন।
একজন শিশুর চাহিদা একমাত্র তার মা ই বোঝে তাই প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষকের বিকল্প নেই, বিভিন্ন ছড়াগান শুনিয়ে মা যেমন তার সন্তানকে ঘুম পাড়ানো,, খাওয়ানো কার্যক্রম সম্পন্ন করেন ঠিক তেমনি মহিলা শিক্ষক ও শিশুদের ছড়াগান,, নাচ,,বিভিন্ন অংগভংগি,অভিনয়ের মাধ্যমে ঔই শিশুদেরই শিক্ষা দান করেন যাতে শিশুদের কক্ষনো মনে না হয় যে তারা বাসার বাইরের পরিবেশে অবস্থান করছে এক্ষেত্রে ও নারী শিক্ষকের অবদানই সর্বাধিক। মহিলা শিক্ষকের কাছে শিশুরা সবসময় অধিক নিরাপত্তা বোধ করে যা শিখন শেখানোতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।একজন নারী শিক্ষক সবসময় চাই বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীরা যেন আনন্দের সাথে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে,স্কুলের প্রতি তারা যেনো আগ্রহী ও আন্তরিক হয়।তাদেরকে ক্লাসে এবং ক্লাসের বাইরেও বিভিন্নভাবে পড়ালেখা ও ক্লাসের প্রতি মনোযোগী হতে উদ্বুদ্ধ করাই নারী শিক্ষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। এটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য খুবই সুখকর বিষয় যে বর্তমানে নারী শিক্ষকগণ শ্রেনিকক্ষে বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রম (নিজ হাতে উপকরণ তৌরি,উপকরণের যথাযথ ব্যবহার,আকর্ষণীয় পরিবেশ,দেয়ালিকা,ফুলের বাগান) পরিচালনার মাধ্যমে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে আরো উন্নত ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে উপস্থিতি যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া সহ সৃজনশীল কাজের প্রতি আগ্রহ যা quality education বাস্তবায়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক।এক কথায় বলা যায় প্রাথমিক শিক্ষায় নারী শিক্ষকের অবদান অনস্বীকার্য।
লেখক:
মাসুদা পারভীন
সহকারী শিক্ষক, ডাংমড়কা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।
Copyright © 2025 দৈনিক সাতনদী. All rights reserved.