
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি: আশাশুনি দিঘলারআইট গ্রামের সৌদি প্রবাসী বাবুর আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুর ৩ টায় দিঘলারআইট জোয়ার্দ্দার বাড়ী গোরস্থান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রামের শত শত নারী পুরুষের অংশ গ্রহনে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, ভিকটিম আশিকুজ্জামান বাবুর মা ফাইমা খাতুন, বোন ফাতেমা খাতুন, মামা রোকনুজ্জামান, মিনারা খাতুন, লিয়াকত আলী জোয়াদ্দার প্রমুখ। ভিকটিমের মা ও বোন জানান, বাবু ২০২২ সালে সৌদিতে যায়। গরু, গহনা, জমাজমি বিক্রয় ও ধারদেনা করে তাকে বিদেশ পাঠাই। সেখানে বেশ ভালভাবে কাজে ছিল। প্রতিমাসে আমাদের কাছে ৩০/৪০ হাজার টাকা পাঠাত। তার আপন চাচাত মামা বাচ্চু গাইনের (গ্রাম রুইয়ার বিল) মেয়ে আফসানা মিম তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ৮/১০/২৪ তাং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মিম ও তার মা বাবারা নানা কৌশলে বাবুর কাছ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে। ফলে আমাদের কাছে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। বলে আমি শ্বশুর বাড়ি জমি কিনতেছি, ঋণদেনা শোধ করতেছি। তার শ্বশুরের ব্যবসার জন্য আমাদের কাছে টাকা চাইলে জমি বন্ধক দিয়ে ৫০ হাজার টাকা তার শ্বশুরকে দেই। বিয়ের পর এক বছর সাত মাসে তারা ৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এরমধ্যে মিম তার পিতা, মাতার কুপরামর্শে তার সাথে নানা অশোভন ও ঘৃনিত আচরণ করে, “আমাকে বিয়ে করেছ, মনের বাসনা পুরন করতে পারনা, জীবন রেখেছ কেন? মরতে পারনা।” এমন কথা ও গালি দিয়ে তাকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এক পর্যায়ে সে সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। জানতে পেরে সহযোগিদের কুপরামর্শে গত ২৬ জুন মিম তার স্বামীকে ডিফোর্স প্রদান করে। স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতনে বিপর্যস্ত বাবু স্ত্রীর ডিফোর্স পেয়ে চরম ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। কষ্টের উপার্জনের টাকা শ্বশুরদের হাতে তুলেদিয়ে ডিফোর্স হাতে পেয়ে বাবু দিশেহারা হয়ে পড়ে। এবং ১৫ জুলাই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। তাকে প্ররোচনা, আর্থিক ক্ষতি ও মানসিক ভাবে নির্যাতনের মাধ্যমে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে প্রকান্তরে তারা হত্যার অপরাধ করেছে দাবী করে বক্তাগণ জানান, ৪৭ দিন পর বাবুর মৃতদেহ দেশে আনা হয়। এব্যাপারে বাচ্চু গাইন, আফসানা মিম, রোকসানা খাতুন ও সুমা খাতুনকে আসামী করে বিজ্ঞ আমলী ০৮ নং (আশাশুনি) আদালত, সাতক্ষীরায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তারা বাবুর মৃত্যু ঘটনার প্ররোচনাকারীদের গ্রেফতার, অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানান। সবশেষে মিমের ফাঁসি চাই সহ নানা শ্লোগান সহকারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।