তরিকুল ইসলাম: মোবাইল ফোন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে কালিগঞ্জের নলতার উত্তর কাজলা গ্রামের আমিরুল ইসলামের পুত্র নাশকতা মামলার আসামী এবং মটর চালকলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রাইসুল ইসলাম রাসেলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় সাধারন ডায়েরি করেছে এক তরুণী। ওই তরুণী নাম আজমিরা খাতুন। সে কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের আলাউদ্দীন গাজী কন্যা। জিডি সুত্রে জানা যায়, আজমিরার ব্যবহৃত মটোরোলা কোম্পানীর মটো ইডগো প্লাস মডেলের ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যায়। ফোনটি সাতক্ষীরার কোন সার্ভিসিং সেন্টার থেকে সার্ভিসিং করাতে না পেরে ঢাকায় অবস্থানরত তার পূর্ব পরিচিত রাইসুল ইসলাম রাসেলের সাথে ব্যাপারটি শেয়ার করে। এসময় রাসেল দামি ফোনের লোভ সামলাতে না পেরে ফোনটি নিজের কব্জায় নিতে বড় মিস্ত্রির থেকে ফোন সার্ভিসিং করে দেয়ার কথা বলে আজমিরাকে ফোনটি কুরিয়ার করে ঢাকায় পাঠাতে বলে। তার কথায় বিশ্বাষ করে গত মার্চ মাসের ২ তারিখে
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস সাতক্ষীরা শাখা থেকে ঢাকার কল্যাণপুরে রাসেলের ঠিকানায় আজমিরা ফোনটি পাঠায়। যার রশিদ নং-৩০১২৩০০০০০৬৬৪৯/১। মোবাইলটি রাসেল ওই মাসের ৫ তারিখে সুন্দরবন কুরিয়ারের কল্যাণপুর শাখা থেকে সংগ্রহ করে। এরপর আজমিরাকে মোবাইলটি সার্ভিসিংয়ে দিয়েছে বলে জানায়। দীর্ঘদিন মোবাইল সম্পর্কে রাসেল কোন খবর না জানানোই আজমিরা রাসেলের কাছে কল করে মোবাইল সম্পর্কে জানতে চায়। তখন রাসেল মোবাইলটি ঠিক করতে ২৫ হাজার টাকা লাগবে বলে আজমিরাকে জানায়। ব্যায়বহুল খরজের কথা শুনে আজমিরা মোবাইল সার্ভিসিং করতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং মোবাইলটি আজমিরার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়ার জন্য রাসেলকে অনুরোধ করে। এরপর রাসেল কলটি কেটে দিয়ে লাপাত্তা। আজমিরার কল আর রাসেল রিসিভ করেনা। এক পর্যায়ে আজমিরার মোবাইল নাম্বারটি রাসেল ব্লক লিস্ট রেখে দেয়। এরপর আজমিরা হতাশ হয়ে যায়। সে বিভিন্ন নাম্বার থেকে রাসেলকে ফোন দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে আজমিরার ভয়েস শুনেই
রাসেল কল কেটে দিয়ে নাম্বারটি ব্লক লিস্টে ফেলে দেয়। এভাবে একদিন আজমিরা তার ভাইয়ের ফোন থেকে রাসেলকে কল করে এবং কাকতালীয়ভাবে রাসেল কলটি রিসিভ করে কথা বলে। তখন রাসেলকে মোবাইলটি ফেরত পাঠাতে অনুরোধ করলে আজমিরাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার কাছে কোন ফোন নেই বলে আজমিরাকে সাফ জানিয়ে দেয় রাসেল। এবং এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আজমিরার অবস্থা খারাপ করে দেবে। এবং সে মটরচালকলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বলে তার উপরে হাত অনেক লম্বা। মটরচালকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আলী হোসন স্বয়ং তাকে সাপোর্ট দেয় বলে তাকে কেউ কিছু করতে পারেনা বলে হুমকি দিয়ে কল কেটে দেয়। এরপর থেকে প্রতারক রাসেল আর আজমিরার সাথে যোগাযোগ করেনা। পরে আজমিরা কোন উপায় না পেয়ে রাসেলের স্ত্রী সোহেলী তামান্নার সাথে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করে তাকে ব্যাপারটি বলে। তখন রাসেলের স্ত্রী রাসেলকে বাটপার বলে আখ্যায়িত করে চ্যাটিং কনভার্সেশনে বলেন, রাসেল বিভিন্ন জায়গা থেকে এভাবে বাটপারি করে টাকা পয়সা নিয়ে আসে। কয়েকবার করে তাকে প্রতারণা করতে নিষেধ করার পরেও সে কথা শোনেনা। আপনার মোবাইলের বিষয়ে আমি তাকে বলবো। তবে সে আপনার মোবাইল ফেরত পাঠাবেনা। কারণ তার কাছে কোন জিনিস একবার আসলে তা আর ফেরত যায়না। সে বাটপারি করে টাকা পয়সা রোজগার করে বলে তার স্ত্রী চ্যাটিং কনভার্সেশনে জানায়। (কনভার্সেশন সংরক্ষিত) পরে আজমিরা কোন উপায় না পেয়ে সোমবার (১৯ জুন) সাতক্ষীরা সদর থানায় প্রতারক রাসেলের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। যার জিডি নং-১১০৬। এব্যাপারে জিডির তদন্তকারী অফিসার এএসআই আসাদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। তদন্তপূর্বক অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও নাশকতা মামলার আসামী প্রতারক রাসেলে বিরুদ্ধে দেশে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সুবিধা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।